নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়োগ দুর্নীতির রেশ এবার স্কুল চত্বর ডিঙিয়ে পা রেখেছে রাজ্যের নানা পুরসভা এলাকায়। ED বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দাবি, কুন্তল ঘোষ(Kuntal Ghosh) ও অয়ন শীলের(Aayan Shil) মাধ্যমে রাজ্যের ৭০টি পুরসভার(Municipalities) অন্তত ৫ হাজার পদে বেআইনি ভাবে নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আবার উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার(Barracpur Sub Division) একসময়কার ‘বামদুর্গ’ হিসাবে চিহ্নিত কামারহাটি পুরসভার(Kamarhati Municipality) নাম বিশেষ ভাবে উঠে এসেছে। কেননা এই পুরসভায় ২০১৭ ও ২০১৯ সালে দুই দফায় এই পুরসভায় মোট ২২৭জন নিয়োগ হন পুরকর্মী হিসাবে। আর এই নিয়োগের দায়িত্বে ছিল অয়নের সংস্থা ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেড(Infozen Private Limited)।
আরও পড়ুন ১০০ দিনের ধাক্কা লাগবে পঞ্চায়েতের ভোটে, মানছেন পদ্মনেতারা
বাম জমানার অবসানের পরে কামারহাটি পুরসভাও তৃণমূলের দখলে এসেছিল। তারপরেই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৭ ও ২০১৯ সালে দুই দফায় কর্মী নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। দুই দফায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার। এই পরীক্ষার দায়িত্বেই ছিল অয়নের সংস্থা। সেই পরীক্ষার পরে দুই দফায় মোট ২২৭জন নিয়োগ পান যাদের মধ্যে চাকরি পেয়েছিলেন অয়ন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীও। যদিও শ্বেতার দাবি, তাঁর নিয়োগ স্বচ্ছ। সেই চাকরি পাওয়ার পিছনে কোনও টাকাপয়সার লেনদেন হয়নি, যদিও তা মানতে নারাজ ED’র আধিকারিকেরা। একইভাবে কামারহাটি পুরসভার পাশেই থাকা পানিহাটি পুরসভাতেও(Panihati Municipality) ২০১৭ সালেও পুরকর্মী নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। সেই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বেও ছিল অয়নের কোম্পানি। কিন্তু সেই পরীক্ষায় কোনও নিয়োগ হয়নি। কেন সেই নিয়োগ হয়নি সেটাও আরও এক রহস্য।
আরও পড়ুন বেসরকারি হাসপাতালগুলির জন্য কড়া নিয়মাবলী আনছে মমতার সরকার
গোটা বিষয়টি নিয়ে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানিয়েছেন, ‘আমাদের পুরসভায় নিয়োগের জন্য আমরা ডিএলবি-র কাছে অনুমোদন চাই। সেখান থেকে অনুমোদন আসার পর আলোচনা করে ঠিক হয়, এজেন্সির মাধ্যমে পরীক্ষা হবে। সেইমতো টেন্ডার করে ওই কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে পরীক্ষার্থীরা আবেদন করেন। রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে ডিএলবি এবং এসডিওর প্রতিনিধিও ছিলেন। সেখানে নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর ডিএলবির অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ হয়, যেখানে ক্লার্ক, টাইপিস্ট, মজদুর, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সহ বিভিন্ন পদ রয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে শ্বেতা চক্রবর্তী আমাদের পুরসভায় সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন। আমাদের পুরসভায় নিয়োগের ব্যাপারে কোনও দুর্নীতি নেই।’ এই একই প্রসঙ্গে আবার পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায় জানিয়েছেন, ‘বেআইনিভাবে কারোর কোনও নিয়োগ হয়নি। যে সব অভিযোগ উঠছে তা ভিত্তিহীন। পুরসভায় কয়েক বছরে কোনও নিয়োগই হয়নি। তাই বেআইনি নিয়োগের কোনও প্রশ্নই আসছে না।’