নিজস্ব প্রতিনিধি,সন্দেশখালি: উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালিকাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৮ ।তার মধ্যে মহিলা ৬ পুরুষ ১২। ধৃতদের আদালতে পেশ করে পুলিশ।বহিরাগতদের খুঁজে বার করতে শুরু হয়েছে পুলিশের তল্লাশি অভিযান। এদিকে ১৪৪ ধারা বলবৎ হতেই রাজ্য প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। এর মধ্যে সন্দেশখালি তিন হেভিওয়েট শাসকবিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।যার মধ্যে মূল নাম রয়েছেন উত্তর ২৫ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি উত্তম সর্দার । এদিকে, বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার কনভেনার বিকাশ সিং, সন্দেশখালি সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার সহ সন্দেশখালি কাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা সময় যত এগিয়েছে তত বাড়ছে। উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে জমি দখল করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ,জুলুম, ভয় দেখানো ,মারধর একাধিক অভিযোগ রয়েছে ।সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দেশখালি থানা(Sandeshkhali P.S.) পুলিশ গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে, সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া, উস্কানিমূলক কথাবার্তা, আদিবাসীদের একাংশকে ক্ষেপিয়ে তুলে আন্দোলনকে সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে।বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার কনভেনার বিকাশ সিং তার বিরুদ্ধে আদিবাসীদের একটা অংশকে জমায়েত করে মিছিল সংঘটিত করা, অপরাধীকে সাহায্য করা এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙ্গার জন্য উস্কানি দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এই বিকাশ সিংহের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে তিনি এরাও একবার জেলও খেটেছিলেন। তারপরে তাকে রাজ্য বিজেপি(BJP) থেকে বহিষ্কার করা হয় ।বেশ কয়েক মাস আগে নতুন করে আবার বিজেপি দলে জায়গা পান। বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার কনভেনার দায়িত্ব পান। তারপর সন্দেশখালি কান্ড নিয়ে গ্রেফতার হয় এই নেতা। এই দুজনকে রবিবার বসিরহাট আদালতে পেশ করা হয়। সন্দেশখালি থানার পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে নতুন কোন তথ্য পায় কিনা সেটাও তদন্তকারীরা দেখে নিতে চাইছে।বিকাশ সিং এর স্ত্রী স্বপ্না সিং আভিযোগ করেন আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে,সন্দেশখালিকাণ্ডে নারী নির্যাতন সহ একাধিক অভিযোগে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় শেখ শাহজাহানের অন্যতম সাগরেদ উত্তম সর্দারকে। তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলা পরিষদের সদস্য ও তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতির দ্বায়িত্বে ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির ঘটনায় ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে শনিবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। তারপরেই সন্দেশখালি থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার কনভেনর ও সন্দেশখালির বাসিন্দা বিকাশ সিংহকেও। রবিবার দুজনকেই বসিরহাটের মহকুমা আদালতে(Bashirhat Court) হাজির করা হয়।পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে নিতে আবেদন জানায় ।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে কলকাতার রেড রোডে(Red Road) ধরনা মঞ্চে থেকে সন্দেশখালি কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের দল থেকে সন্দেশখালীর তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য ও সন্দেশখালি ব্লক ২ এর অঞ্চল সভাপতি উত্তম সর্দারকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক(Minister Partha Bhowmick)। যদিও এখনো বাকী দুইজন অর্থাৎ শেখ শাজাহান ও শিবপ্রসাদ হাজরাকে কোন রকম শাস্তির বিধান দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বে। কারণ হিসেবে, মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের দাবি শেখ শাহজাহান এবং শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে এখনো কেউ সরাসরি লিখিত অভিযোগ করেনি। তাই তাদের বিরুদ্ধে এখনই কোন শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি দল।