এই মুহূর্তে




ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট




নিজস্ব প্রতিনিধি: নতুন সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছিল শীর্ষ আদালতের কাছে। মোট ৭২ টি মামলার আবেদন জমা পড়েছিল। বুধবার তারই শুনানি ছিল। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ মামলা শুনে রায় দান করেছে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথন। শেষ পর্যন্ত ওয়াকফ সংশোধিত আইন নিয়ে অন্তর্বর্তী কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার হবে ফের শুনানি।

মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র ওয়াকফ সংশোধনী আইনের একটি নির্দিষ্ট ধারায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।  লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির সাংসদ মনোজ ঝা আবেদন জমা দিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও ওয়াকফ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন।

বুধবার দুপুর ২:২৫ মিনিটে মামলা শুরু হয়। প্রথমেই বিচারপতিরা জানান সকলের প্রশ্ন শোনা সম্ভব নয়। কারণ সময় সীমিত। বিচারপতিদের বেঞ্চ বলে, ‘‘সকলের বক্তব্য শোনা সম্ভব নয়। এক, আমাদের দু’টি প্রশ্ন রয়েছে। আমরা কি এই মামলা শুনব, না হাই কোর্টে পাঠাব? দুই, কী বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান? এর উপর নির্ভর করছে প্রথম প্রশ্নও।’’

রাজ্যের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন কপিল সিব্বাল। তিনি বলেন, “নতুন সংশোধনী আইন অনেক ক্ষেত্রেই সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে। আমার ধর্মে কী ভাবে কেউ উত্তরাধিকারী হবে, রাষ্ট্র তা বলার কে?’’

তারপর বিচারপতিদের বেঞ্চ এর উত্তরে বলেন, “ওয়াকফ সংশোধনী আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা বাধা হতে পারে না। এই ২৬ নম্বর ধারা সকলের জন্য। এটি ধর্মনিরপেক্ষ।’’

এরপর সিব্ববাল সওয়ালে বলেন, “‘এত দিন শুধু মুসলিমরাই ওয়াকফ বোর্ডে থাকতে পারতেন। এখন হিন্দুরাও পারবেন। এটা মৌলিক অধিকারের দখলদারি।’’ এর উত্তরে প্রধান বিচারপতি জানান, দু’জন মাত্র অমুসলিম সদস্য থাকবেন। সিবালের পাল্টা সওয়াল, নতুন আইনে বলা হয়েছে ‘অন্তত দু’জন অমুসলিম’ সদস্য থাকবেন।

এরপর সিব্বল বলেন, ‘‘ওয়াকফ ১০০ বছরের পুরনো। কিন্তু এখন ওরা ৩০০ বছরের পুরনো সম্পত্তির ডিড চাইবে। এটাই সমস্যা।’’ এরপর জমি নথিভূক্তকরণ প্রসঙ্গে কপিল যখন বলেন, “আমার জমি রয়েছে। তাতে আমি অনাথ আশ্রম করব। এতে সমস্যা কোথায়? এর জন্য নথিভুক্তকরণ করতে যাব কেন?’’ প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ওয়াকফে সম্পত্তির নথিভুক্তকরণ করলে সুবিধা হবে।

সিব্বাল জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সীমাবদ্ধতা ছিল না। নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা বলতে পারি না যে, নিয়ন্ত্রণ করলেই তা অসাংবিধানিক।’’

এরপর ওয়াকফ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যখন দিল্লি হাই কোর্টে ছিলাম, শুনতাম, সেটা নাকি ওয়াকফের জমিতে। আমাদের ভুল বুঝবেন না। সব ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তকরণ ভুল ভাবে হয়নি।’’ আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির পাল্টা সওয়াল, ‘‘আমরা শুনেছি সংসদও ওয়াকফের জমিতে হয়েছে।’’ তিনি বলেন, নয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনের কিছু অংশে আপাতত স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। গোটা আইনে নয়।

ওয়াকফ বিপক্ষে সওয়াল করেছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতদের আইনজীবীও। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি কাশ্মীরি পণ্ডিত। আমাদের একটা মন্দির রয়েছে। এ বার মুসলিমদের একটা অংশ এসে বলল, এটা আমাদের জমি। এটা কি ঠিক? একই ঘটনা হচ্ছে এখানেও। জেলাশাসক বলছেন, আমি সিদ্ধান্ত নেব। আমি সর্বশক্তিমান।’’

ওয়াকফ আইনের পক্ষে সওয়াল করে  আইনজীবী এসজি মেহতা বলেন, যৌথ সংসদীয় কমিটি ৩৮ বার বৈঠক করেছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে লক্ষ লক্ষ স্মারকলিপি পরীক্ষা করেছে। তার পর সেই বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়েছে।

শেষ পর্যন্ত প্রধান্ বিচারপতি বলেন, ‘‘কোনটা ওয়াকফ সম্পত্তি, কোনটা নয়, তা নিয়ে কোর্টকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হোক।’’ পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ‘‘জেলাশাসক যদি সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন যে, কোনটা ওয়াকফ, কোনটা নয়, তা কি ঠিক হবে? ‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?

‘‘আমাদের সামনে তিনটি পথ। এক, আমরা পিটিশন শুনব। দুই, হাই কোর্টে পাঠিয়ে দেব। তিন, হাই কোর্টে পড়ে থাকা পিটিশনও গ্রহণ করে আমরাই সিদ্ধান্ত নেব।’’- একথা জানিয়ে ওয়াকফ সংশোধিত আইন নিয়ে অন্তর্বর্তী কোনও স্থগিতাদেশ জারি করল না সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার আবার হবে শুনানি।

শুনানি শেষে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিচারপতির বেঞ্চ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে,”‘যে হিংসা হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। এ রকম হওয়া উচিত নয়।”




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দুঃসংবাদ, দ্রুত গলছে হিমালয়ের হিমবাহ, চরম জল সঙ্কটের মুখোমুখি ২০০ কোটি

‘নিজেদের চরকায় তেল দিন’, মুর্শিদাবাদ অশান্তি নিয়ে ইউনূস সরকারকে জবাব বিদেশ মন্ত্রকের

ভারতের মুকুটে নয়া পালক, ইউনেস্কোর মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ হল গীতা

জ্বর-মাথাব্যথার ওষুধও রয়েছে তালিকায়! ‘ভয়ংকর ক্ষতিকর’ ৩৫টি ওষুধ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র

কড়া হাতে সব অশান্তি দমন করার নির্দেশ সিপি মনোজ ভার্মার

জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা ছিনিয়ে নিল ঈগল! রহস্যে মোড়া অলৌকিক ঘটনা

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর