নিজস্ব প্রতিনিধি: রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে(Viswabharati University) আবারও ধাক্কা লাগল তার ভাবমূর্তিতে। কেননা জাতিবৈষম্যমূলক মন্তব্যের জেরে গ্রেফতার হওয়া বিশ্বভারতীর সংগীতভবনের মণিপুরী নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক সুমিত বসুকে(Sumit Basu) ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেন সিউড়ি জেলা আদালতের(Suri District Court) ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক। বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র সোমনাথ সৌ-কে প্রকাশ্য রাস্তায় জাতি বৈষম্যমূলক কুমন্তব্য করার পাশাপাশি তাঁকে গালিগালাজ করা ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছিল সুমিত বসুর বিরুদ্ধে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেই আন্দোলন চলাকীলন সময়েই সুমিত বসু প্রকাশ্যে ওই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। সেই ঘটনার জেরে বোলপুরের শান্তিনিকেতন থানায়)Shantiniketan Police Station) সুমিত বসুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সোমনাথ(Somnath Sou)।
এই প্রসঙ্গে সোমনাথ জানিয়েছেন, ‘আমাকে নিচু জাতের বলে নানান কটূক্তি করেছিলেন উনি। একজন অধ্যাপক হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই ধরনের কথা কীভাবে বলতে পারেন, আমি জানি না। আমি ওঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। আইনের ওপর তাঁর ভরসা রয়েছে। সেকারণেই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম। সিউড়ি আদালতে মামলাও করেছিলাম।’ কার্যত সোমনাথের অভিযোগের জেরে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ সুমিত বসুকে গ্রেফতার করার তোড়জোড় শুরু করে। সেই সঙ্গে সিউড়ি থানায় সুমিত বসুর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়। পাল্টা সেই আদালতেই জামিনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন সুমিত বসু। কিন্তু সিউড়ি আদালত সেই জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় ও তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। তার জেরে সুমিত আবার কলকাতা হাইকোর্টে গ্রেফতারির স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলা শুনতেই অস্বীকার করে।
এরপর থেকেই পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন সুমিত। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ রবিবার সন্ধ্যাবেলায় কলকাতা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আরপর রাতেই তাকে নিয়ে আসা হয় শান্তিনিকেতন থানায়। সেখান থেকে এদিন সকালে তাকে তোলা হয় সিউড়িতে থাকা বীরভূম জেলা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। সেখানেই বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ঘটনার জেরে কার্যত আবারও মুখ পুড়ল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। একজন ছাত্রের বিরুদ্ধে যে একজন অধ্যাপক, তাও বিশ্বভারতীর, এটা ভেবেই অবাক রাজ্যের শিক্ষাবিদরা। শিক্ষা যা শুধু সার্টিফিকেটে সীমাবদ্ধ থাকে না সেটা আরও একবার সামনে এল এই ঘটনার জেরে। সুমিতের মতো লোকেরা যে সার্টিফিকেট সর্বস্ব অ-শিক্ষায় পরিপুষ্ট সেটাই আবারও সামনে এল।