নিজস্ব প্রতিনিধি: এ যেন দুরাবস্থা কাটছেই না বিজেপির (BJP)! একের পর এক পদত্যাগ। উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেরদিনই বিজেপি থেকে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। রাজ্য কমিটি থেকে দুপুরেই পদত্যাগ করেছিলেন দুই বিধায়ক। মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরী শংকর ঘোষ এবং বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। এঁদের মধ্যে গৌরী শংকর বিজেপির রাজ্য সম্পাদক। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছিলেন কমিটির আরও এক সদস্য বানী গাঙ্গুলি। ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, জেলা মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনে স্বজনপোষণের।
বিকেল গড়াতেই পদত্যাগ করেন আরও এক সদস্য দেবাশিষ মিত্র ওরফে বাপী। তিনি ছিলেন ই- লাইব্রেরি, লাইব্রেরি ও রিডিং রুমের দায়িত্বে। আর একই সঙ্গে খবর পাওয়া গিয়েছে, নদিয়ায় গেরুয়া শিবির থেকে পদত্যাগ করেছেন ১০ জন নেতা। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
বিক্ষুব্ধ নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপি জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, অর্জুন তাঁদের কাজ করতে দিচ্ছেন না। পদত্যাগ (Resign) করেছেন জেলার ৪ সহ- সভাপতি, ৩ সম্পাদক এবং ৩ সাধারণ সম্পাদক। নদিয়ার এই ১০ জন জেলানেতা ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন পদত্যাগপত্র। প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে ২ কেন্দ্রে হেরেছে বিজেপি (BJP)। তারপরে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেছিলেন, অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। এর দায় নিতেই হবে। বিজেপি বিধায়ক সৌমিত্র খাঁ দোষারোপ করেছিলেন রাজ্য নেতৃত্বের ওপরেই।
আবার রবিবারেই ফাঁস হয়েছিল বিজেপির প্রতিবাদের আসল চেহারা। পলিটিক্যাল মাইলেজের জন্যই এত প্রতিবাদের হিড়িক! রাজ্যে খুন থেকে ধর্ষণের ঘটনায় বারবার প্রতিবাদীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বিজেপিকে। ধানতলায় নাবালিকার মৃত্যুতেও সরব হয়েছিল বিজেপি। আর তারপরে দুই বিজেপি কর্মীর মোবাইল কথপোকথনে বোঝা গিয়েছিল আসল রহস্য। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সেই অডিও।
ভাইরাল হওয়া অডিওতে শোনা যাচ্ছে, এই ঘটনার পলিটিক্যাল মাইলেজ নিতে হবে। শুধু তাই নয়, অভিযোগের কপি পরিবর্তন করার কথাও শোনা গিয়েছে ওই অডিও ক্লিপে। বোঝাই যাচ্ছে দুই ব্যক্তির কথপোকথন বিজেপি কর্মীর। সেখানেই শোনা গিয়েছে, ওসির প্রসঙ্গ আসতে অশ্রাব্য গালিগালাজ। দুই ব্যক্তির কথায় উঠে এসেছে রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। পার্থ ওরফে বাবু দা। যদিও বিধায়কের দাবি, অডিও ভাইরাল হয়েছে ঠিকই কিন্তু এর মধ্যে অন্য কিছুই নেই। নেহাত কথপোকথন। প্রসঙ্গত, ডব্লুডব্লুডব্লু ডট এই মুহূর্তে ডট কম সত্যতা যাচাই করেনি এই ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের। দুই বিজেপি কর্মীর অডিও ক্লিপের কথা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল শিবিরে। আর তা শুনে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে বিজেপিকে। সবুজ শিবির থেকে প্রতিক্রিয়া, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে রাজ্যের বদনাম করছে বিজেপি।
সবমিলিয়ে রবিবার খারাপ গেল বিজেপির। সবকটা ধাক্কাই বেশ বড়।