নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বামীর প্রথম পক্ষের স্ত্রী(Wife) মারা গিয়েছিল ১৯৯৪ সালে। স্বামী মারা গিয়েছেন ২০২১ সালে। কিন্তু স্বামীর(Husband) পেনশনের(Pension) অধিকারী হতে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে ছুটতে হল আদালতে(Court)। কেননা স্বামীর প্রথম পক্ষের মেয়ে সেই পেনশন পাওয়ার পথে বাধা হয়ে উঠেছিল। প্রয়োজনীয় নথি কিছুতেই তুলে দিচ্ছিল না সৎ মায়ের হাতে। শেষে অবশ্য আদালতের নির্দেশে সৎ মায়ের হাতে বাবার পেনশনের প্রয়োজনীয় নথি তুলে দিল মেয়ে। আর তার জেরে স্বামীর পেনশন পাওয়ার অধিকারী হলেন স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম(Jhargram) জেলায়। যিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্বামীর পেনশনের অধিকার অর্জন করলেন তাঁর নাম দৈববতী মাহার। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নরম গ্রামে।
জানা গিয়েছে, ১৯৯৪ সালে মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজার পোস্ট অফিসের কর্মী যতীন্দ্রনাথ মাহারের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যতীন্দ্রনাথের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ৩ মেয়ে। প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যাওয়ায় ১৯৯৬ সালে তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। সেই সময়েই দৈববতীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ২০০১ সালে সরকারি কাজ থেকে অবসর নেন যতীন্দ্রনাথ। ঘটনা হচ্ছে বাবার দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেনি তাঁর ৩ মেয়ে। তাঁদের সঙ্গে দৈববতীর সম্পর্ক ভাল ছিল না। যদিও যতীন্দ্রনাথ দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেই থাকতেন। ২০২১ সালে যতীন্দ্রনাথের প্রথম পক্ষের বড় মেয়ে সন্ধ্যা মণ্ডল তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ে নিজের শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানেই সেই বছর মারা যান যতীন্দ্রনাথ। যদিও দৈববতীর অভিযোগ, যতীন্দ্রনাথকে কয়েক দিনের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যা কার্যত লালগড়ের বাড়িতে তাঁকে আটকে রেখেছিল। সেখানে বিনা চিকিৎসাতেই মারা যান যতীন্দ্রনাথ। কার্যত সেই সময় থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।
যতীন্দ্রনাথ মারা যাওয়ায় নিয়মানুযায়ী দৈববতী পেনশনের অধিকারী। কিন্তু তা পাওয়ার জন্য যে সব প্রয়োজনীয় নথি দাখিল করার কথা তা জমা দিতে পারছিলেন না দৈববতী। কেননা সেই প্রক্রিয়ায় তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করছিলেন না সন্ধ্যা। তিনি বাবার ডেথ সার্টিফিকেট আটকে রেখে দিয়েছিলেন। আর তার জেরে দৈববতীকে কার্যত অনাহারে জীবন কাটাতে হচ্ছিল। ভরসা বলতে ছিল রেশনের চাল। এই অবস্থায় ঝাড়গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেন দৈববতী। দীর্ঘ ১ বছর ধরে মামলা চলার পরে আদালত সন্ধ্যাকে নির্দেশ দেয় যতীন্দ্রনাথবাবুর ডেথ সার্টিফিকেট দৈববতীর হাতে তুলে দিতে। সেই নির্দেশ মেনে সন্ধ্যা ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দিয়েছে দৈববতীর হাতে। এরফলে স্বামীর পেনশন পাওয়ার অধিকারী হলেন দৈববতী।