নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। রয়েছে কন্যাশ্রী ও সবুজশ্রীর মতো প্রকল্পও। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ধারক করা হয়েছে মহিলাদেরই। একই সঙ্গে চালু হয়ে গিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পও। তারপরেও সমাজের একশ্রেনীর মানুষের মধ্যে কন্যাসন্তান নিয়ে বিরূপ মনোভাব এখনও যায়নি। তারই প্রমাণ মিলল মালদা জেলার এক ঘটনায়। মেয়ে হওয়ার জেরে স্ত্রীকে হাসপাতালে ফেলে চলে গেলেন স্বামী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার জেরে অবশ্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। শিশুকন্যা সহ ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সরকারি হোমে।
জানা গিয়েছে, এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিল একুশ বছরের পূজা মার্ডি ও ২৪ বছরের সুরাজ বেসরা। দুইজনেরই বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থানার মঙ্গলপুর গ্রামে। গত ১২ নভেম্বর প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মালদার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পূজা। সেদিনই তিনি এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সেই খবর পাওয়ার পরেই পেশায় শ্রমিক সুরাজ আর হাসপাতালমুখো হয়নি। এমনকি পূজার শ্বশুরবাড়ি থেকে কেউ এসে একবারের জন্য তাঁদের দেখেও যায়নি। আবার বাড়ির অমতে বিয়ে করায় পূজার বাপের বাড়িরও কেউ হাসপাতালে আসেনি। তাঁর কোনও খোঁজখবরও নেয়নি। এই অবস্থায় টানা ২২ দিন ধরে মালদার ওই বেসরকারি হাসপাতালেই ছিলেন পূজা ও তাঁর সদ্যজাত কন্যা। শেষে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানায়। তারপরেই এদিন পূজা ও তাঁর সদ্যজাত কন্যাকে মালদা জেলারই এক সরকারি হোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পূজার দাবি, তাঁদের গ্রামের এক ওঝা নাকি তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের আশ্বাস দিয়েছিল তাঁর ছেলে হবে। কিন্তু হয়েছে মেয়ে। তার জেরে ওই ওঝা সুরাজ ও তার বাড়ির লোকেদের ওই মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে বারণ করে। তার জেরেই আর হাসপাতালমুখো হয়নি সুরজ। তবে পুলিশও হাত গুটিয়ে বসে নেই। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মালদা জেলা পুলিশ প্রশাসন। সুরজের পরিবারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে সুরজ এখন ভিন রাজ্যে রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।