নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘আয়কর’-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির রোষ থেকে বাঁচতে বিজেপির তহবিলে দু’হাত উপুড় করে চাঁদা দিয়েছে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি। মোট ৯৪৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে ‘সিপলা’, ‘টরেন্টো ফার্মা’ ‘রেড্ডি’জ ল্যাবরেটরির’ মতো দেশের শীর্ষ ওষুধ প্রস্ততকারী সংস্থাগুলি। তার মধ্যে বিজেপিকেই দিয়েছে ৩৯৩ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকার বন্ড। বিজেপির পরে সর্বাধিক চাঁদা পেয়েছে তেলঙ্গানার প্রাক্তন শাসকদল ভারত রাষ্ট্র সমিতি। ওই দলের তহবিলে চাঁদা বাবদ জমা পড়েছে ৩২৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।
নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপিকে মোটা টাকা চাঁদা দেওয়া সংস্থার মধ্যে রয়েছে রেড্ডি’জ ল্যাবরেটরি এবং মাইক্রো ল্যাবস। গত বছরের ১৩ নভেম্বর রেড্ডি’জ ল্যাবের অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল আয়কর দফতর। আর তাতেই কাজ হয়েছে। নভেম্বরের ১৭ তারিখে অর্থাৎ আয়কর হানার তিন দিন বাদে বিজেপিকে নির্বাচনী বন্ডে ১৭ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে দেশের নামী ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে বিজেপিকে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৬ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছিল মাইক্রো ল্যাবস। উল্লেখ্য, করোনার সময়ে যে ডোলো-৬৫০ নামক প্যারাসিটামল ট্যাবলেট মুড়িমুড়কির মতো বিকিয়েছিল, সেই ট্যাবলেটের উৎপাদক ছিল মাইক্রো ল্যাবস।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য বলছে, দেশের শীর্ষ ওষুধ সংস্থা সিপলা ৩৯.২ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। ওই বন্ডের ৯৪ শতাংশই বিজেপির তহবিলে জমা পড়েছে। কংগ্রেসের তহবিলে পড়েছিল ৬ শতাংশের মতো চাঁদা। আর এক শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গুজরাত ভিত্তিক টরেন্টো ফার্মা ৭৭.৫ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। ওই বিপুল বন্ডের সিংহভাগ টাকা জমা পড়েছিল বিজেপির তহবিলে। টরেন্টো ফার্মা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৬১ কোটি টাকা ভেট দিয়েছিল কেন্দ্রের শাসকদলকে। রেড্ডি’জ ল্যাবরেটরি ৮৪ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল। তার মধ্যে ২৫ কোটি টাকার বন্ড জমা পড়েছিল বিজেপির খাজাঞ্চিখানায়। ডিভি’জ ল্যাবরেটরি ৫৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল। তার ৫৫ শতাংশই জমা পড়েছে বিজেপির ঘরে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে কারখানা কিংবা ব্যবসা রয়েছে এমন ওষুধ সংস্থাগুলি ‘বেওসা’ বাঁচাতে শাসকদলের তহবিলে চাঁদা বাবদ দিয়েছে ২৫৩ কোটি টাকার বেশি।