নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতেগোনা ঠিক আর ৫টা দিন। তারপরেই মে দিবস(May Day)। মানে ১ মে। বিশ্ব শ্রমিক দিবস। জরুরি পরিষেবা ব্যাতীত সেদিন সব অফিস ছুটি। একই সঙ্গে সেদিন ছুটি থাকবে সোনাগাছিরও(Sonagachi)। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, আগামী বুধবার, মে দিবসে বন্ধ থাকবে কলকাতা(Kolkata) তথা দেশ ও এশিয়ার সব থেকে বড় যৌনপল্লী সোনাগাছি। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির(Durbar Mahila Samanay Committee) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোনাগাছির যৌনকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকের মর্যাদা চেয়ে আসছেন। কিন্তু কোনও সরকার তা দিচ্ছে না। আদালতে গিয়েও সেই স্বীকৃতি মেলেনি। কিন্তু তাঁদের দাবি থেকে তাঁরা সরে আসবেন না। তাঁদের দাবিকে সামনে রেখেই তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আর সেই সূত্রেই সোনাগাছির যৌনকর্মীরা(Sex Workers) পয়লা মে শ্রমিকের মর্যাদা চেয়ে পথে নামার পাশাপাশি দেহ ব্যবসার কাজ থেকে ছুটি নেবেন। সেদিন কার্যত বন্ধ থাকবে সোনাগাছিতে দেহব্যবসার কাজ।
এই প্রসঙ্গে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সম্পাদক বিশাখা লস্কর জানিয়েছেন, দেহ বেচে যারা খায় তাঁরাও শ্রমিক। আর পাঁচটা ক্ষেত্রের শ্রমিকদের মতো দেহ ব্যবসায়ীরাও শ্রমিক। কিন্তু তাঁরা শ্রমিকদের মর্যাদা পান না। সেই মর্যাদা চেয়েই তাঁরা এবার পথে নামবেন। শহর কলকাতার যৌনকর্মীরা যে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তাদের কোনও সরকারী স্বীকৃতি নেই। নেই কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর। নিজেদের শ্রমিক সংগঠনের জন্য সরকারী রেজিস্ট্রেশন নম্বরের দাবি রেখেছেন দেহ ব্যবসায়ীরা। রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের দাবি, অবিলম্বে সব দেহ ব্যবসায়ীদের শ্রমিকের মর্যাদা দিতে হবে। আর তাই শ্লোগান উঠছে, ‘গতর খাটিয়ে খাই, শ্রমিকের অধিকার চাই।’ তবে শুধু পয়লা মে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা পথে নামবেন এমনটা নয়। তার আগে ৩০ এপ্রিল বিকালেও তাঁরা এই দাবি নিয়েই পথে নামবেন। সেদিন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে বিকেল ৪টে থেকে একটি জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। শহরের দেহ ব্যবসায়ীরা সেখানে হাজির থাকবেন।
সেই জমায়েত থেকে দাবি তোলা হবে, আর পাঁচজনের মতো রেশন কার্ড, ভোটার কার্ডে যৌনকর্মীদের বাড়ির ঠিকানা দিতে বাধ্য করা যাবে না। তাঁদেরকে ঠিকানা গোপন রাখার অনুমতি দিতে হবে। কাস্টমার আর যৌনকর্মীর মধ্যে সম্মতির সহবাস হলে তাতে পুলিশ নাক গলাতে পারবে না। ২০২২ সালের ১৯ মে সুপ্রিম কোর্ট দেহ ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি রায় দেয়। সেখানে বলা হয়েছিল, স্বেচ্ছায় কেউ দেহ ব্যবসায় যুক্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। দেহ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিলেও তা কার্যকর করা হচ্ছে না। অবিলম্বে তা কার্যকর করতে হবে।