এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বাফার জোনে থেকেও জয়ন্তীর হোমস্টে বন্ধ, ধাক্কা রুটিরুজিতে

নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত(Subhash Dutta) গ্রিন ট্রাইব্যুনালে(National Green Tribunal) মামলা দায়ের করেছিলেন এই অভিযোগে যে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বেআইনিভাবে চলছে হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁ। এর পাশাপাশি মহানন্দা, জয়ন্তী, মেচি, মালের মতো নদীগুলির বুক থেকে আইনের তোয়াক্কা না করে পাথর তুলে নিয়ে গিয়ে রমরমিয়ে ব্যবসা চালানো হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর ধারে খাটাল-খোঁয়াড় খুলে ফেলেছে। এমনকি রমরমিয়ে চলছিল পাথরের ক্রাশারও। সেই মামলায় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল রায় দেয় বক্সা জাতীয় উদ্যানের(Buxa Tiger Reserve Forest) এক কিলোমিটারের মধ্যে গজিয়ে ওঠা যাবতীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ঝাঁপ ফেলতে হবে। সরকারি পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত রাখা যাবে না। আর এই রায়ের জেরেই জয়ন্তী(Jayanti) এলাকার যাবতীয় হোমস্টে(Home Stay) বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে জয়ন্তী গ্রামটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে নয়, তার অবস্থান বাফার এলাকায়।

উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার(Alipurduyar) জেলায় কালচিনি ব্লকের রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একপ্রান্তে বক্সা জাতীয় উদ্যানের কার্যত কান ঘেঁষে অবস্থান জয়ন্তীর। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জেরে পর্যটকেরা বার বার সেখানে ছুটে যান। আর তার জেরেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে সেখানে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল একের পর এক হোটেল, রিসর্ট, রেস্তোরাঁ। সবই কংক্রিটের নির্মাণ। শুধু তাই নয়, ওই সব হোটেলের প্লাস্টিক, আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল নদীতে। তার জেরে পরিবেশের ভয়ঙ্কর দূষণ ঘটছিল সেখানে। এর বিরুদ্ধেই গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন বাংলার বিশিষ্ট পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তাঁর দায়ের করা মামলার জেরে চলতি বছরের ৩০ মে পরিবেশ আদালত জানিয়ে দেয়, বক্সা জাতীয় উদ্যানের এক কিলোমিটারের মধ্যে গজিয়ে ওঠা যাবতীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ঝাঁপ ফেলতে হবে। সরকারি পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত রাখা যাবে না। সেগুলি সরকারি প্রশিক্ষণের কাজে লাগানো যেতে পারে। না হলে ভেঙে ফেলতে হবে। লৈতি নদীর ১০০ মিটারের মধ্যে চলা স্টোর ক্র্যাশারও বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে বক্সা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বেআইনিভাবে চলা সব হোটেল, রিসর্ট, রেস্তোরাঁ এবং পর্যটন কেন্দ্র ২ মাসের মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

সেই রায় মেনে জয়ন্তী এলাকায় যাবতীয় কংক্রিটের বাণিজ্যিক নির্মাণ ইতিমধ্যেই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের লোকেরা ও পুলিশ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই সব বেআইনি হোটেল, রিসর্ট ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে জয়ন্তীতে খুব কম করে হলেও ২ হাজার মানুষের বসবাস। এদের মধ্যে অনেকেরই বাড়িতে হোম-স্টে’র ব্যবসা ছিল। গোটা জয়ন্তী আশেপাশের এলাকা মিলে প্রায় ৭০টির মতো হোম-স্টে রয়েছে জয়বতীতে। কিন্তু এখন সেই সব হোম-স্টেতে পর্যটকদের আর থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় পুলিশ ও বনদফতরের তরফে জয়ন্তীর যাবতীয় হোম-স্টে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে সরাসরি গ্রামের ওই দুই হাজার মানুষের রুটিরুজিতে ধাক্কা লেগেছে। আর এখানেই দুটি আশঙ্কার বিষয় দেখা দিয়েছে, এক পেটের জ্বালায় জয়ন্তীর যুবকেরা না কেএলও জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখায় এবং দুই, বনের কাঠ পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তার থেকেও বড় বিষয় গ্রামবাসীদের দাবি, পরিবেশবেশবিদ সুভাষ দত্ত যে তথ্য পরিবেশ আদালতে তুলে ধরেছেন তা ভুল। জয়ন্তী গ্রামটি বক্সা জাতীয় উদ্যানের কার্যত কান ঘেঁষে অবস্থান করলেও তা বাফার জোনের মধ্যে রয়েছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে নয়। সেই সম্পর্কিতত নথিও তাঁদের কাছে আছে। সেখানেই লেখা আছে জয়ন্তীর ৩৭ হেক্টর এলাকা বাফার জোন। এমনকি ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত রাজ্য বনদফতর জয়ন্তীর বাসিন্দাদের কাছ থেকে নিয়মিত খাজনাও নিয়েছে। আর এখানেই গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, ভুল তথ্য দিয়ে তাঁদের রুটিরুজিতে কেন আঘাত হানলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত? আর কেনই বা পরিবেশ আদালত তা ভাল করে খতিয়ে না দেখে রায় দিয়ে দিল?

জয়ন্তীর গ্রামবাসীদের আরও দাবি, তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। বিডিও হোক কী জেলা শাসক তাঁদের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। জয়ন্তীতে পর্যটকদের দিনের বেলায় আসতে দেওয়া হলেও রাতে কাউকে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি রাতবিরাতে পুলিশ এসে ঘুরে ঘুরে দেখছে হোম-স্টেতে লুকিয়ে কেউ থাকছে কিনা। ফলে হোম-স্টের মাধ্যমে জয়ন্তীতে যে ২ হাজার মানুষের রুটিরুজি চলত, তাতেই সরাসরি ধাক্কা নেমে এসেছে। কার্যত না খেতে পেয়ে মরতে বসেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। জয়ন্তীর মানুষজনের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে তাঁরা আদালতে মামলাও লড়তে পারছেন না। কলকাতার এক বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছিলেন পরিবেশ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য। কিন্তু তিনি এক একদিন সাওয়ালের জন্য ৬ লক্ষ টাকা চাওয়ায় সেই মামলাও আর করে উঠতে পারেননি জয়ন্তীর মানুষজন। এখন তাঁদের কাছে কার্যত না খেয়ে মরা বা হাতে বন্দুক, কুড়ুল তুলে নেওয়া ভিন্ন দ্বিতীয় কোনও রাস্তা খোলা নেই। তাঁরা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুন যাতে জয়ন্তীর এই ২ হাজার মানুষ যেন না খেতে পেয়ে মরতে না হয়।   

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

আগামী দু-তিন পশ্চিমবঙ্গ সহ ৪ রাজ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি মৌসম ভবনের

পদ্ম প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ভুয়ো অডিয়ো বানিয়ে গ্রেফতার পদ্মনেতা

সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের অধ্যক্ষার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

৪৮ লাখ টাকার গয়না, ২টি গাড়ি, আর কী কী সম্পত্তি রয়েছে রচনার?

বহিষ্কৃত বিজেপি নেতাকে নিয়ে চা চক্রে যোগ দিয়ে বিতর্কে দিলীপ

প্রথম দিনেই বিক্ষোভের মুখে রেখা পাত্র, প্রচারে বিঘ্ন

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর