নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায় বর্ষা(Monsoon) এসেছে অনেক দিন আগেই। যদিও উত্তরবঙ্গে(North Bengal) বর্ষা নির্দিষ্ট সময়ের আগে এলেও দক্ষিণবঙ্গে(South Bengal) তা এসেছে নির্দিষ্ট সময়ের পরে। শুধু তাই নয়, বর্ষা আসার আগে থেকে বর্ষা পা রাখার পরেও দেখা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বুকে যতটা ভারী বর্ষণ হয়েছে তার ছিঁটেফোঁটাও কিন্তু দেখা যাচ্ছে না দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে। উত্তরবঙ্গে স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও দক্ষিণবঙ্গে কিন্তু রীতিমত বৃষ্টি ঘাটতি ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থার মধ্যেই কিন্তু দেখা যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের বুকে কিছু কিছু জেলায় হঠাৎ করেই বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে স্থানীয় ভাবে। সেই মেঘ থেকে বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি বজ্রপাতের ঘটনাও কিন্তু ঘটছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই রকমই বজ্রপাতের জেরে নদিয়া(Nadia) জেলায় ২জন প্রাণ হারালেন।
জানা গিয়েছে, নদিয়ার করিমপুর থানা এলাকায় ২জন এদিন বজ্রপাতের ঘটনায় মারা গিয়েছেন। এদের মধ্যে ১জনের নাম দু:শাসন অধিকারী। বাড়ি করিমপুর থানার কাঠালিয়া গ্রামে। ঘটনার সময় তিনি মাঠে নিজের জমিতে চাষের কাজ করছিলেন। সেই সময় আচমকা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হয়। বজ্রপাতের ঘটনায় তখন গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন। তাঁদের দ্রুত করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সেখানে দুঃশাসনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অপর ঘটনায় মারা গিয়েছেন করিমপুরের গোয়াস দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গরুকে খাওয়ানোর জন্য পাটের পাতা কেটে মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। মাঝপথে শুরু হয় বৃষ্টি। তখনই বজ্রপাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মিনারুল। তাঁকে উদ্ধার করে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। করিমপুর থানার তরফে জানানো হয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার দুটি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।
এদিন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গাঙ্গেয় বঙ্গের ওপর মৌসুমি অক্ষরেখা অবস্থান করার ফলে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায়। রাজস্থান থেকে বিস্তৃত এই মৌসুমি অক্ষরেখা বাংলার কৃষ্ণনগর হয়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এই অক্ষরেখা আরও ওপরের দিকে উঠবে। তার জেরে উত্তরবঙ্গে আগামী দিনে বৃষ্টি বাড়তে পারে। তবে এখনও কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পরিস্থিতি নেই। জুলাইয়ের শেষে ভরা বর্ষাতেও দক্ষিণবঙ্গের যেখানে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বড় অংশজুড়ে বৃষ্টি হতো। যেমন মধ্য রাজস্থানে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। সেখানে অতিবৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম হিমালয় এলাকায়। এর জেরে উত্তর ভারতজুড়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। তবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত গাঙ্গেয় বঙ্গে ভারী বৃষ্টির কোনওরকম পূর্বাভাস নেই।