নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ পুড়ল গেরুয়া শিবিরের। ফাঁস হয়ে গেল ষড়যন্ত্র। ঝাড়খণ্ডে(Jharkhand) সরকার ফেলার জন্য ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে(Congress MLA) কেনার প্রচেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হল। কেননা বাংলার বুকে হাওড়া(Howrah) জেলার সদর মহকুমার পাঁচলা(Panchla) থানার রানীহাটি মোড়ে ৪৯ লক্ষ টাকা সহ পুলিশের হাতে আটক ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে রবিবার দুপুরে গ্রেফতার(Arrest) করা হয়েছে। হাওড়া জেলার গ্রামীণ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার রাতে দুটি গাড়িতে থাকা ৩ কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে নগদ যে ৪৯ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে তার উৎস তাঁরা বলতে পারেননি। গত কাল রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত তাঁদের দফায় দফায় জেরা করেছেন পুলিশ ও সিআইডি’র আধিকারিকেরা। সেখানেই তাঁদের কথায় বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে। তারপরেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। মনে করা হচ্ছে এদিনই তাঁদের বিশেষ আদালতে তোলা হবে ও সিআইডি তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে।
শনিবার রাতেই হাওড়া জেলা পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল ঝাড়খণ্ডের নম্বর প্লেট লাগানো ২টি গাড়িতে করে মোটা অংকের টাকা পাচার করা হচ্ছে। সেই সূত্র ধরেই পাঁচলা থানার রানীহাটি মোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে পুলিশ ওই ২টি গাড়ি আটকায়। তল্লাশি চালাতেই বার হয় বস্তা বস্তা টাকা। রাতভর তা গুণে দেখা যায় মোট টাকার পরিমাণ ৪৯ লক্ষ। টাকা পাওয়ার পরেই ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে আটক করে জেরা করা শুরু হয়েছিল। আটক করা হয়েছিল ২টি গাড়ির চালককেও। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিন ৩ বিধায়কের সঙ্গে ওই দুটি গাড়ির চালকদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২টি গাড়িও। রাতেই এই ঘটনার তদন্তে নামে সিআইডি। পুলিশের পাশাপাশি চলে সিআইডির জেরাও। যে ৩জন বিধায়ক এদিন গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা হলেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ইরফান আনসারি, খিজরি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রাজেশ কচ্ছপ ও কোলেবিড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নমন বিক্সাল কোঙ্গারি।
তবে এদিন বেলার দিকে এই ৩ বিধায়কের গ্রেফতারির আগেই তাঁদের সাসপেন্ড করে কংগ্রেস। এদিন সকালেই বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী অভিযোগ করেন বিজেপি থেকে এই ‘অপারেশন লোটাস’ চালানো হচ্ছিল ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস সমর্থিত হেমন্ত সোরেনের সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য। প্রায় একই রকমের অভিযোগ তোলে তৃণমূলও। তারপরেই এদের সাসপেন্ড করেছে কংগ্রেস। এই সাসপেনশান না উঠলে তাঁরা রাজ্য বিধানসভার কোনও অধিবেশনেই যোগ দিতে পারবেন না। ফলে বিজেপি এদের দিয়ে হেমন্তের সরকার ফেলে দেওয়ার যে চক্রান্ত করছিল তা কার্যত মাঠে মারা গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে এটাও ঘটনা ৮১ সদস্য বিশিষ্ট ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় এখন সরকার পক্ষের বিধায়ক সংখ্যা ৫১ থেকে কমে হল ৪৮। তাতে কিছুটা হলেও সরকার চাপে পড়ে গেল।