নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের দিওয়ালিতে দেশের রাজধানী নয়া দিল্লি মুখ ঢেকেছিল ধোঁয়ায়। তুলনায় অনেকটাই দূষণ মুক্ত ছিল কলকাতা(Kolkata)। তার পিছনে কাজ করেছে রাজ্য সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ। কিন্তু এবার শীতকাল(Winter) এসে যাচ্ছে। আবারও শহরের বুকে দূষণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বছর বছর এই দূষণ ঠেকাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের(Firhad Hakim) নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুরনিগম(KMC)। শহরের বুকে জল ছিটিয়ে দূষণকে কাবু করতে চাইছে পুরনিগম। আর সেই লক্ষ্যেই ২০টি বড় আকারের ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার গাড়ি কিনতে চলেছে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। এক একটি গাড়ির দাম পড়ছে ২০ লক্ষ টাকা। প্রতিটি গাড়ি ১০ হাজার লিটার জল ধারণ করতে পারবে।
আরও পড়ুন হাওড়া ব্রিজে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু দুই পথচারীর
গত দেড় দশক ধরে দেখা যাচ্ছে শীতকালে দিল্লির মতোই কলকাতার বুকেও বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। বাতাসে যে পরিমাণ ধূলিকণা, কার্বনকণা কিংবা গ্যাস থাকার কথা তার কয়েক গুণ বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে ওই সব কণা। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র অস্ত্র ছিল সবুজের সমাহার বাড়ানো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে গাছগাছালির সংখ্যা গত কয়েক বছরে হু হু করে কমেছে কলকাতায়। বৃক্ষরোপণের কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা দূষণ ঠেকানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। ফলে বায়ুদূষণ(Air Pollution) ঠেকাতে অন্য পন্থা নিতে হচ্ছে কলকাতা পুরনিগমকে। সেই সূত্রেই পুরনিগমের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাস্তার ধারে থাকা গাছে, রাস্তায়, বাতাসে জলকণা স্প্রে করে দুষণ কমানোর চেষ্টা করা হবে। তার জন্যও কেনা হবে ২০টি বড় আকারের ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার গাড়ি। কলকাতার বিভিন্ন বড় বড় রাস্তা যেমন এ জে সি বোস রোড, এ পি সি রায় রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, গণেশ চন্দ্র অ্যাভিনিউ, সার্দান অ্যাভিনিউ, ই এম বাইপাস, আশুতোষ মুখার্জি রোড, গড়িয়াহাট রোড সহ বিভিন্ন রাস্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল এলাকায় এই জল ছড়ানো হবে। ওই রাস্তাগুলিতে স্প্রিঙ্কলার দিয়ে জল ছিটিয়ে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ কম করার চেষ্টা হবে।
আরও পড়ুন বঙ্গবাসী সতর্ক হন মোবাইল ব্যবহার নিয়ে, সমীক্ষা নবান্নের
এই বিষয়ে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ইন কাউন্সিল তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘আগে যেভাবে বড় বড় গাড়ি দিয়ে রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো সাফ করা হত, তেমন আকারের যান আসছে। জল স্প্রে করার মেশিন থাকবে তাতে। শুধুমাত্র শীতের দূষণ নয়, সারা বছরই গাছ এবং রাস্তায় জল দেওয়ার জন্য এই গাড়িগুলি ব্যবহার করা হবে।’ পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এরকম কয়েকটি গাড়ি পুরনিগমের হাতে এখনই আছে। কোভিডকালে এদের মধ্যে কিছু গাড়িকে স্যানিটাইজার ছড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহারও করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব গাড়ির মধ্যে অনেকগুলি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ফলে নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে। শহরে ঠান্ডা পড়লেই বাতাস শুকনো হয়ে যাবে। তার জেরে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বাড়বে। সেটা শুরু থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে শহরের বাতাসের মান ভাল রাখা সম্ভব। প্রয়োজনে দিনে দু’বার করে জল স্প্রে করবে পুরনিগমের এই গাড়িগুলি।