এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

শীতের ভ্রমণ: সুন্দরী পেলিং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও ইচ্ছেপূরণ লেক

নিজস্ব প্রতিনিধি: কাঞ্চনজঙ্ঘাকে খুব কাছ থেকে দেখতে চান, সকাল, দুপুর ও পড়ন্ত বিকেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার সঙ্গে লুকোচুরি খেলে কাটিয়ে দিতে চান? তাহলে আপনাকে আসতেই হবে পেলিং। পশ্চিম সিকিমের এই ছোট্ট অথচ ছিমছাম শহরে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন হাতের নাগালে ধরা দেয়। বলা ভালো, পেলিংয়ের মাথায় মুকুটের মতো বিরাজ করে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা। অনেকে সিকিমের গ্যাংটক ঘুরে ফেরার পথে একদিন পেলিংয়ে কাটিয়ে যান। তবে শুধুমাত্র পেলিং ও রাবাংলাতে দুই-তিন দিনের জন্য ঘুরে আসা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক পেলিং ঘোরার খুঁটিনাটি।

আগেই বলেছি, পেলিং হল পশ্চিম সিকিমের এক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। যার উচ্চতা ৬৭০০ ফুট। ছোট্ট শহরটি মূলত তিনভাগে বিভক্ত যথাক্রমে আপার, মিডল ও লোয়ার পেলিং। এখানের বেশিরভাগ হোটেল থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ ভিউ দেখতে পাবেন। আর শহরে হাঁটতে গিয়ে যে কোনও জায়গা থেকেই হাতের নাগালে বিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য দেখতে পাবেন। অবশ্যই আকাশ পরিস্কার থাকলে। তবে শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, পাগল করা ঝর্ণা, পাহাড়ি নদী, পাহাড় ঘেরা টলটলে লেক, জঙ্গল, প্রাচীন বৌদ্ধ মনাস্ট্রি ও বিখ্য়াত একটি ব্রিজ সবই আছে সুন্দরী পেলিংয়ে। আর এর সঙ্গে রাবাংলা ও নামচি যোগ করে নিলে তো সোনায় সোহাগা।

পেলিংয়ের সাইট সিইং কিন্তু পুরো দিনের ব্যাপার। অন্যতম আকর্ষণ অবশ্যই রিম্বি ও কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস। পেলিং থেকে কমবেশি ১২ কিমি দূরেই পথের ধারে দেখা পাবেন সুন্দরী রিম্বির। মাঝারি উচ্চতার পাহাড়ি ঝর্ণাটি বেশ সুন্দর। জলপ্রপাতের নিচে একটি কুণ্ড তৈরি হয়েছে। কিছুটা সিড়ি বেয়ে নামতে হয়। পাশেই দেখবেন রিম্বি খোলা বা নদী। এখানে একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। এই রিম্বি নদীকে সঙ্গী করে কিছুটা এগোলেই দেখবেন রিম্বি অরেঞ্জ গার্ডেন। এটি পর্যটকদের কাছে নতুন সংযোজন। কিছুটা নীচে রিম্বি নদী, সিড়ি বাঁধানো পথ বেয়ে কমলালেবুর বাগানের মধ্যে দিয়ে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় নদীর পাড়ে। এখানে কমলা ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরণের গাছ আছে। এই পথেই দেখতে পাবেন দারাপ ভিলেজ। পেলিং থেকে দুরত্ব ৬-৭ কিলোমিটার। এখানে কয়েকটি হোম স্টে গড়ে উঠেছে।

রিম্বি ফলস দেখে গাড়ি আরও কিছুটা এগিয়ে গেলে দেখবেন পেলিংয়ের অন্যতম আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস। পেলিং থেকে দুরত্ব ২৪ কিমি, কিন্তু পথের শোভা অসাধারণ। ঘন সবুজের প্রেক্ষাপটে অনেকটা উঁচু থেকে সশব্দে ঝাঁপিয়ে পড়ছে জল। আর চারিদিকে সাদা ফেনার মতো জলকণা ছড়িয়ে পড়ছে অনেকটা দূর পর্যন্ত। যা দেখে মুগ্ধ হন না এমন পর্যটকের সংখ্যা পাওয়া যাবে না। মূল জলপ্রপাতটি দুটি ভাগে নীচে পড়েছে। তবে উপরের ধারাটিতে পৌঁছনো যায় না। অনেকটা উঁচু থেকে জল ধাপে ধাপে পাথরখণ্ডে আছড়ে পড়ার পর দ্বিতীয় ভাগে জল সরাসরি নীচে এসে পড়ছে। পাথরের গা বেয়ে মূল জলপ্রপাতের পাদদেশ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যায়। এই জলধারা কাঞ্চনজঙ্ঘার কোনও গ্লেসিয়র থেকে উৎপত্তি। এই জলপ্রপাত ঘিরে বেশ কয়েকটি চা ও খাবারের দোকান আছে। ইচ্ছে করলেই জলপ্রপাত দেখতে দেখতে স্থানীয়দের তৈরি কিছু জলখাবার চেখে দেখতে পারেন।


এখান থেকে চলুন খেচিপেরি লেক। এটিও পেলিংয়ের অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয়দের কাছে খুবই পবিত্র এই জলাশয় দেখলে মন ভরে যাবে। খেচিেপরি শব্দের অর্থ হল ইচ্ছেপূরণ। ফলে বলা যায় এটি ইচ্ছেপূরণ লেক। লেকের ধারে বৌদ্ধ ধর্মের নানা রঙিন পতাকা সর্বদা ফরফর করে উড়ে চলেছে। কথিত আছে এই লেক এতটাই পবিত্র যে এর জলে কোনও পাতাও পড়ে না। অথচ এই লেকের চারধারে প্রচুর গাছ। এই লেকে রয়েছে প্রচুর মাছ, কিন্তু ধরা হয়না। মাছেদের খাবার দিলেই দেখবেন বিশাল বিশাল মাছ কিলবিল করছে। ফলে শিশুদের কাছে এটা খুবই আকর্ষণীয়। খেচিপেরি লেকের পাশেই রয়েছে এক বিশাল বৌদ্ধ মনাস্ট্রি।

আরও কিছুটা এগিয়ে যেতে পারেন দুটি পাহাড়ের সংযোগ স্থাপনকারী অসাধারণ সুন্দর সিনশোর ব্রিজ দেখতে। দুটি পাহাড়ের মধ্যে ঝুলন্ত এই সাসপেনশন ব্রিজটি এশিয়ার দ্বিতীয় উচ্চতম। ব্রিজের লোহার পাটাতনে অনেক ফুটো করে রাখা আছে। যা দিয়ে কয়েকশো ফুট নীচের জলধারা ও জঙ্গল দেখার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা সারা জীবন মনে থাকবে। এই খাদ একটাই গভীর যে ওই ফুটো দিয়ে কোনও পাথর ফেললে সেটা নীচে পড়তে প্রায় এক মিনিট লেগে যায়। সিনশোর ব্রিজ পেরিয়ে আরও ৫ কিমি গেলে পাবেন ডেন্টাম ভ্যালি ও গ্রাম। এটি ৬৬০০ ফুট উচ্চতায় এই গ্রাম ভারত-নেপাল সীমান্তের শেষ গ্রাম। ফেরার পথে দেখে নিন পেমিয়াংশি মনাস্ট্রি। যা পেলিং থেকে মাত্র ৩ কিমি দূরে। এটি সিকিমের দ্বিতীয় প্রাচীন বৌদ্ধ মনাস্ট্রি। এটি নির্মান হয়েছে ১৭০৫ সালে, এবং ভিতরে অপূর্ব সুন্দর পদ্মসম্ভবের মূর্তি রয়েছে। বৌদ্ধ লামাদের তিব্বতি বাদ্যযন্ত্রে সুর তুলে প্রার্থনা এক অন্য জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে। এছাড়া পেলিংয়ে দেখে নিতে পারেন রক গার্ডেন, ছাঙ্গে জলপ্রপাত, ও সবচেয়ে পুরোনো সাঙ্গাচোলিং মনাস্ট্রি। এছাড়া পেলিংয়ের এখন মুখ্য আকর্ষণ হয়ে উঠেছে স্কাই ওয়াক। পাহাড়ের খাদে স্বচ্ছ কাঁচের তৈরি হাঁটার রাস্তা। এটি দেখতে ভুলবেন না। 


কিভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন

এনজেপি বা শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে তিস্তা বাজার, জোরথাং পার করে সরাসরি পেলিং পৌঁছে যাওয়া যায়। সময় লাগবে পাঁচ ঘণ্টা মতো। আবার গ্যাংটক ও দার্জিলিং থেকেও পেলিং পৌঁছনো যায়। মূলত গ্রীষ্ণ ও পুজোর সময় পেলিং ভ্রমণের আদর্শ সময়। মিডল ও লোয়ার পেলিংয়ে অসংখ্য হোটেল রয়েছে। এছাড়া কিছু দামী রিসর্ট ও হোম স্টেও চালু হয়েছে পেলিংয়ে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

তৃতীয় দফায় ধনী প্রার্থী ১,৩৬১ কোটির মালিক, গরিব প্রার্থীর সম্বল মাত্র ১০০ টাকা

দিদির বিয়েতে নাচতে নাচতে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ল কিশোরী

তৃতীয় দফার ভোটে লড়াইয়ে নামা ১৮ শতাংশ প্রার্থীই ‘দাগি’

তৃতীয় দফায় ৩৯২ জন কোটিপতি, শুধু বিজেপিরই ৭৭ জন

প্রয়াত বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী মারিয়া ফেলিসিয়ানা

রেকর্ড দামে নিলাম টাইটানিকের যাত্রীর  সোনার ঘড়ি

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর