নিজস্ব প্রতিনিধি: মারা গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকায় নারী মারিয়া ফেলিসিয়ানা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। সাধারণত মেয়েদের উচ্চতা পুরুষদের তুলনায় খুব কমই হয়। লম্বা মেয়েদের চাক্ষুষ করা খুবই আনকমন ব্যাপার। কিন্তু মেয়েরাও লম্বা হয়। তবে এই মারিয়া ছিলেন বিশ্বের প্রথম লম্বা মহিলা। গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আরাকাজুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই মারা যান।
মারিয়ার ১০বছর পর্যন্ত তাঁর উচ্চতা সাধারণ কিশোরীর মতো থাকলেও বয়ঃসন্ধিকালে অদ্ভুতভাবে তিনি লম্বা হতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে মাত্র ২০ বছর বয়সেই মারিয়ার উচ্চতা হয়ে দাঁড়ায় ৭ ফুট ৩.৮ ইঞ্চি। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, আম্পারো দো সাও ফ্রান্সিসকোতে। আর তাঁর উচ্চতাই তাঁকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। তিনি ভাল বাস্কেটবল খেলতেন।
এরপর তরুণী বয়সে সার্কাসে নাম লেখান। অল্প কিছুদিনেই তিনি সার্কাসের একজন আকর্ষণীয় ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। দেশ-বিদেশ ঘুরে ঘিরে সার্কাসের বিভিন্ন শো করতে শুরু করেন। এরপর তিনি এতটাই পরিচিত হয়ে ওঠেন যে, ৬০-এর দশকে তাকে ‘উচ্চতার রানি’ উপাধি দেওয়া হয়। এছাড়াও ১৯৭০ সালে তাঁর নামে নামাঙ্কিত হয় আরাকাজু শহরের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিংটির। যার নাম ছিল এস্তাদো দে সার্জিপ। তবে ২৮ তলা বিল্ডিংটির নাম মারিয়ার হতেই ব্রাজিলের ইতিহাসে নাম উঠে যায় মারিয়ার। ২০২২ সালের মে মাসে, ভবনটির প্রবেশদ্বারে মারিয়ার একটি মূর্তি বানানো হয়। তাঁর মৃত্যুতে আরাকাজুর রাজধানীতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
মারিয়ার মৃত্যুর খবরে ব্যথিত সে দেশের প্রশাসক মহল। ব্যক্তিগত জীবনে মারিয়া ১৯৭৩ সালে ২৭ বছর বয়সে অ্যাসুয়ার্স জোসে ডস সান্তোসকে বিয়ে করেন। এরপরই তিনি সার্কাসে শো করা ছেড়ে দেন। বর্তমানে মারিয়া সান্তোসের তিন সন্তান। দুই ছেলে ও এক মেয়ে।যাদের উচ্চতা ৭ ফুটের কাছাকাছি। তবে মারিয়া মৃত্যুর আগে ১৫ বছর হুইলচেয়ারেই কাটান। এবং গৃহবন্দি জীবনযাপন করতেন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে বাড়িতেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে মারিয়া ফেলিসিয়ানার। মারিয়ার পর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মহিলা হলেন তুরস্কের রুমেসা গেলগি। যার উচ্চতা ৭ ফুট 0.৭১ ইঞ্চি।