নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: স্বাধীনতার ৭৫ বছর বাদে দেশজুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু হবে কিনা তা নিয়ে ধর্মীয় সংগঠন ও সাধারণ মানুষের মতামত চাইল আইন কমিশন। বুধবার কমিশনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিজেদের মতামত বা পরামর্শ জানাতে পারবেন সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে ধর্মীয় সংগঠনগুলি। আচমকাই আইন কমিশনের এমন তৎপরতার পিছনে গোপন রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হল সকলের জন্য এক আইন, যা সারা দেশের সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও লাগু হবে। এর মধ্যে রয়েছে, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক প্রভৃতি। সংবিধানের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, ভারতের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার জন্য রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। পর্তুগিজ শাসনের অবসানের পরে শুধুমাত্র গোয়াতেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু রয়েছে। বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর দাবি তোলা হয়েছে।
২০১৪ সালে দিল্লির মসনদে আসীন হওয়ার পরেই দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর উদ্যোগ নিয়েছিল মোদি সরকার। ২০১৮ সালে ২১তম আইন কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত নেওয়া হয়েছিল। যদিও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে গঠিত হয় ২২তম আইন কমিশন। যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ পি শাহ। ২০২১ সালে ফের তিন বছরের জন্য ওই কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। আগামী বছর দেশে লোকসভা ভোট। আর ওই ভোট বৈতরণি পার হতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আর রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করতে এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আইন কমিশন।