নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিবর্তনের পরে বাংলার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মাথার ওপর পাকা ছাদ যাতে থাকে তার জন্য কম দামের সরকারি আবাসন প্রকল্প নির্মাণের ওপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই সূত্রেই উত্তরবঙ্গের(North Bengal) শিলিগুড়ির(Silliguri) উপকন্ঠে কাওয়াখালিতে(Kawakhali) তৈরি করা হয়েছে ‘উৎসধারা’ উপনগরী(Utsadhara Upanagari)। মূলত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের নিজস্ব ফ্ল্যাট প্রদান করার লক্ষ্য নিয়েই এই প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। সেই ‘উৎসধারা’ উপনগরীতেই এখন মাত্র ৩ লক্ষ টাকায় মিলছে ফ্ল্যাট আর সেই ফ্ল্যাট পেতে ইতিমধ্যেই ১২০০’র ওপর পরিবার আবেদন জানিয়ে বসে আছে। আরও যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ আবেদন জানাতে পারেন তার জন্য Siliguri Jalpaiguri Development Authority বা SJDA আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েও দিয়েছে। সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। কার্যত এই প্রকল্পকে ঘিরে শিলিগুড়ি তো বটেই গোটা উত্তরবঙ্গজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
শিলিগুড়ির কান ঘেঁষে থাকা জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম মৌজায় অবস্থিত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের জন্য কাওয়াখালিতে তৈরি করা হয়েছে ‘উৎসধারা’ উপনগরী প্রকল্প। সেখানেই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির ৪২২ জনকে দেওয়া হবে ফ্ল্যাট। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেশ কয়েক বছর আগে এব্যাপারে উদ্যোগী হয় SJDA। উপনগরীতে ১৮টি ব্লকে এক কামরার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে ৪২২টি যা ৪৪০ বর্গ ফুটের। মাত্র ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সেগুলি প্রদান করা হবে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির হাতে। ফ্যাটগুলিতে একটি বেডরুম, একটি কিচেন ও বাথরুম থাকছে। ৪২২টি ফ্ল্যাটের মধ্যে শিলিগুড়ি শহরের কোটাই সর্বাধিক, ১৬৯টি। এর বাইরে মাটিগাড়া ও রাজগঞ্জ ব্লকের কোটা ৪২টি করে, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, ক্রান্তি, জলপাইগুড়ি সদর ও মালবাজার ব্লকের কোটা ২১টি করে, জলপাইগুড়ি ও মালবাজার শহরের কোটা ১৭টি এবং ময়নাগুড়ি শহরের জন্য ন’টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ রয়েছে।
তবে যে কেউ এই প্রকল্পের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না। যিনি আবেদন জানাতে পারবেন সেই ব্যক্তি বা মহিলার মাসিক আয় হতে হবে ১৮ হাজার টাকার নীচে। বসবাসের জন্য কোনও নিজস্ব জমি থাকা চলবে না। সেই সঙ্গে SDO বা BDO’র কাছ থেকে তাঁদেরকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে এবং তা আবেদন পত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। ইতিমধ্যে ১২০০’র বেশি মানুষ আবেদন করেছেন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এমন সাড়া মেলার পরই আবেদন গ্রহণের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৯ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
এই বিষয়ে SJDA’র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় উৎসধারা উপনগরীতে মাত্র ৩ লক্ষ টাকায় ফ্ল্যাট প্রদান করা হবে। এজন্য আবদেনপত্র গ্রহণের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। এরপর লটারি করে উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এবারই উপভোক্তাদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে। SJDA’র এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেই এই ফ্ল্যাট বিলি করা হবে। অন্য এলাকার বাসিন্দারা এই সুবিধা পাবেন না। এজন্য এলাকাভিত্তিক ফ্ল্যাটের কোটা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আবেদনকারীদের সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির বাসিন্দা হতে হবে। এজন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে সেখানকার সচিত্র ভোটার কার্ড সহ বিভিন্ন নথি দাখিল করতে হবে। সমস্ত আবেদন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে লটারি করে চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকা প্রস্তুত করা হবে।’