নিজস্ব প্রতিনিধি : কথায় বলে, রাজনীতিতে কেউ চিরকালীন শক্র নয়, কেউ চিরকালীন বন্ধুও নয়। একটা সময় যিনি ছিলেন বামেদের চরম শক্রু, এখন তিনিই সিপিএমের বন্ধু। অধীর একটা সময়ে বামেদের কাছে এতটাই চক্ষুশূল ছিল যে ১৯৯৬ সালের বিধানসভা ভোটে নবগ্রাম কেন্দ্রে লড়ার সময়ে মুর্শিদাবাদে ঢুকতে পারেননি অধীর। কলকাতায় বসেই নির্বাচন লড়তে হয়েছিল তাঁকে। এরপর ভাগিরথী নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। কংগ্রেসের সেই অধীরই এখন সিপিএমের উত্তরীয় পরে মহম্মদ সেলিমের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার অনুষ্ঠানে হাজির থাকলেন।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরের পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ থেকে লড়ছেন মহম্মদ সেলিম। আগামী ৭ মে এই মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। তার আগে এদিন মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। সেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। অধীরকে দেখে তাঁকে স্বাগত জানান সেলিম। পড়িয়ে দেন, সিপিএমের নির্বাচনী প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ি-তারা ছাপা উত্তরীয়। সেলিমের দেওয়া উত্তরীয় সাদরে গ্রহণ করেন অধীর। জানা যাচ্ছে, ভোটের আগে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট উভয় পক্ষের নেতা কর্মীরা চাইছিলেন, যাতে মহম্মদ সেলিম ও অধীর চৌধুরী যৌথভাবে কোনও কর্মসূচিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত এক ফ্রেমে ধরা পড়লেন সেলিম ও অধীর।
এদিন জঙ্গিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তাজা হোসেনকেও মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা গিয়েছে। তবে এদিন অবশ্য অধীর চৌধুরী নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেননি। জানা যাচ্ছে, দুদিন পর মনোনয়নপত্র জমা দেবেন অধীরবাবু। সেদিনও মহম্মদ সেলিমকে উপস্থিত থাকতে দেখা যেতে পারে। উল্লেখ্য, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের সবগুলিতে এখনও পর্যন্ত বাম-কংগ্রেসের মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতা হয়নি। ভোটের আগে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিতেই অধীরের এদিনের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।