নিজস্ব প্রতিনিধি: আতঙ্কের নাম ওমিক্রন। করোনার এই নয়া প্রজাতির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তায় গোটা দেশ। ধীরে হলেও ২১৩ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রন। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তেলেঙ্গনা ও দিল্লিতে হু হু করে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। পশ্চিমবঙ্গে আপাতত থাবা বসায়নি ওমিক্রন। কিন্তু ঢিলেমি দিতে নারাজ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ওমিক্রন ঠেকাতেই একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক উড়ানে আসা যাত্রীরা কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরে কোভিড পজিটিভ হলে তাঁদের গন্তব্যে যেতে দেওয়া হবে না। আইসোলেশনে রাখা হবে। স্বাস্থ্য দফতর এও নির্দেশ দিয়েছে যে সমস্ত করোনা রোগীর ভাইরাল লোড ৩০-এর নীচে রয়েছে তাদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠানো হবে।
প্রাথমিক ভাবে কলকাতায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এটা করা হবে, পরবর্তীতে দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়িতে একইভাবে সিটি ভ্যালু ৩০-এর নিচে থাকা করোনা রোগীদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে পাঠানো হবে, বলে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বিদেশ থেকে কলকাতায় আগত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এটাই করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এরই সঙ্গে নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রী কোভিড পজিটিভ হলেই পৃথকভাবে রাখতে হবে তাঁকে। ঝুঁকিপ্রবণ দেশ থেকে এলে, বিমানবন্দরে নামা মাত্র নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওমিক্রন আক্রান্ত এমন সন্দেহজনক ব্যক্তিদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা ঘরেই আইসোলেশনে রাখতে হবে। অন্যান্য করোনা রোগীদের সেখানে রাখা যাবেই না। ওমিক্রন আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য পৃথক শৌচালয় রাখতে হবে। ওই রোগীর ঘরে পিপিই কিট পরে প্রবেশ করা বাধ্যতামূলক। আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে ব্যাপারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
এই নিয়মের সঙ্গেই জোর দেওয়া হয়েছে ভাইরাল লোড ৩০-এর নীচে থাকা ব্যক্তিদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠাতে হবে। এর পিছনে কারণ রয়েছে, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে একটা প্রোটোকল রয়েছে ওমিক্রন শনাক্তের জন্য। কিন্তু ভিন রাজ্য থেকে বাংলার নানা প্রান্তে আসা ব্যক্তিদের করোনা শনাক্তের সুযোগ কম। সেক্ষেত্রে ভিন রাজ্য থেকে আসা কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনা হলে তার ভাইরাল লোড যদি ৩০-এর কম হয় তাহলে সংক্রমণ ছড়ানোর মাত্রা বেড়ে যায়। ভিন রাজ্য থেকে জেলায় এলে সেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য পাওয়া সহজ হয় না। তাতে দ্রুত করোনা ছড়ালেও নিয়ন্ত্রণ করতে দেরী হবে। তাই কলকাতা দিয়ে শুরু করেই অন্যান্য জেলাতেও এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও করোনার নয়া প্রজাতি ওমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিরা উপসর্গহীন। তাদের থেকেও করোনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকেই। তাই এই নতুন নির্দেশিকাইয় একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
ইতিমধ্যেই একাধিক ভিন দেশ থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে এসেছেন অনেকেই। যদিও তাদের মধ্যে একজন শিশু ছাড়া কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হননি। সেই শিশুটিও ওমিক্রন মুক্ত হয়েছে মাত্র একদিনের মধ্যে। তাতেও ঢিলেমি দিতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতর। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে ওমিক্রন নিয়ে সব রাজ্যকেই সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর বুধবারই স্বাস্থ্য দফতর একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে বজ্র আঁটুনি আঁটতে চাইছে।