নিজস্ব প্রতিনিধি: দলে পদ পেতে গেলে বিধায়ক-সাংসদকে দিতে হবে টাকা। এমনই অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতাই। আর এই অভিযোগ ঘিরেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি শিবির। এর আগে তোলা চেয়ে হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন এক বিজেপি নেতা। পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি নেতা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তুলে উপনির্বাচনের আগে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তারপর উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে ভাঙন। ধানতলা নাবালিকার রহস্য মৃত্যুতে পলিটিক্যাল মাইলেজ নেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছে ভাইরাল অডিওতে। তারপরেই নব্য- পুরাতন, দিলীপ- সুকান্ত দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। সামসেরগঞ্জের বিডিওকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দিয়ে গ্রফতার হয়েছেন বিজেপি যুব মোর্চা শহর সহ সভাপতি মিলন ঘোষ। তারপরেই ফের প্রকাশ্যে এল দলেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। এ যেন হিন্দুত্ববাদী দলের শিয়রে শনি!
বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সাংগঠনিক বৈঠক বৃহস্পতিবারই। তার আগেই ‘ঘুষ’ ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ দেখা গিয়েছে পদ্ম শিবিরের অন্দরে। অভিযোগ করেছেন, বিজেপির পাত্রসায়রের মণ্ডল ২ সভাপতি। তাঁর অভিযোগ বিধায়ক (MLA) ও সাংসদকে (MP) মাসোহারা না দেওয়ার জন্যই তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়েছে। মণ্ডল সভাপতি তমালকান্তি গুইয়ের অভিযোগ, তাঁকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অনুপ ঘোষকে। টাকা দিতে না পারার জন্যই তা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তিনি বিভিন্ন সাংগঠনিক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান। ছেড়ে যান সমস্ত হোয়াটসআপ গ্রুপ। এরপরেই তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধায়ক ও সাংসদের ওপর। অভিযোগের তিরে বিদ্ধ করেন জেলা সভাপতিকেও। অভিযোগকারী বলেন, যারা দল করতে গিয়ে মার খেলেন, জেল খাটলেন, লড়লেন তাঁদের দলে এখন জায়গা হয় না। জায়গা পায় তাঁরাই, যারা বিশেষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ ও মাসোহারা দেন নিয়মিত। বিষ্ণুপুরে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জেলা নেতাদের নিয়ে হবে বৈঠক। তার আগেই এই বোমা ফাটিয়েছেন পাত্রসায়র মণ্ডল সভাপতি সহ এরকম আরও অনেক মণ্ডল সভাপতি।
বৃহস্পতিবার বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ বলেন, সুকান্ত একা কেউ নন। সবে দায়িত্ব পেয়েছেন। ওঁর অভিজ্ঞতা কম। বলেন, ওঁর জানা উচিৎ কারা এতদিন আন্দোলন করেছেন। দলের দীর্ঘ বছরের নেতা- কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়াও উচিৎ, বলেও দাবি করেন তিনি। তারপরে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এর আগে পুরানো কর্মীদের দলের বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি দিয়েছিলেন কড়া প্রতিক্রিয়া। বিজেপির এই নব্য- পুরানো দ্বন্দ্বে গেরুয়া শিবিরকে বিঁধেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তিনি বলেন, দ্বন্দ্ব মানেই বিজেপি। এখানে শুধু আদি- নব্য দ্বন্দ্ব নেই, আছে আদি- পরিযায়ী- তৎকাল- নব্য দ্বন্দ্ব। সিপিআইএম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, বিজেপিতে এই সময় মুষল পর্ব চলছে।