নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: কাজের সন্ধানে মাত্র ১৪ বছর বয়সে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় এসেছিল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তেলুয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দা রেণু খাতুন। বাড়িতে-বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করত। আজ থেকে ৩৪ বছর আগে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের সন্ধান পাননি ইয়াকুব ও তার স্ত্রী। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু জীবন সায়াহ্নে এসে হারিয়ে যাওয়া মেয়ের খোঁজ পেলেন তারা। ঢাকায় হারিয়ে যাওয়া রেণু এখন সুখে ঘর করছেন পাকিস্তানে। বাবা-মাকে দেখতে জন্মভিটেয় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কিন্তু কীভাবে ঘটল এমন অভাবনীয় ঘটনা? কয়েক দিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রেণুর নাতি আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশে তার দাদুর বাড়ির খোঁজ করেন। হোয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে পরিচয় হয় রাজাবাজারের বাসিন্দা আহাদুল ইসলাম নাঈমের। রেণুর নাতির অনুরোধে খোঁজখবর শুরু করেন আনোয়ার। শেষ পর্যন্ত কয়েক দিনের চেষ্টায় পেয়েও যান ইয়াকুব ও তাঁর স্ত্রী ফুলবানুকে। হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে ফিরে পাওয়ার বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করতে চাননি ইয়াকুব ও ফুলবানু। শেষ পর্যন্ত রেণুর কপালের কাটা দেখে মেয়েকে শনাক্ত করেন। বাবা-মাকে রেণু জানান, বর্তমানে লাহোরের ভাওয়ালপুর জেলার আহাম্মদপুর দক্ষিন গ্রামে বসবাস করছেন। আবুল করিম নামে একজনকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আর নাতি-নাতনি নিয়ে সুখের সংসার তার।
বাবা-মা ও ভাই-বোনদের দেখতে শিগগিরই জন্মভিটেয় আসবে বলেও জানিয়েছেন রেণু। কিন্তু কীভাবে ঢাকা থেকে সুদূর পাকিস্তানে পৌঁছল ১৪ বছরের এক কিশোরী? মাকে রেণু জানিয়েছে, দালালরা তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল। তার পরে মনের মানুষের খোঁজ পেয়ে সংসার শুরু। বাকি গল্প তুলে রেখেছে রেণু। স্বজনদের কাছে ফিরেই সেই গল্প বলবে। ৩৪ বছর বাদে মেয়েকে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন ইয়াকুব ও ফুলবানু।