নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ইতিহাস গড়লেন দেশের প্রথম হিন্দু মহিলা বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। রবিবার দেশের শীর্ষ আদালতের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে এই প্রথম কোনও হিন্দু মহিলা নিয়োগ পেলেন। রবিবার বিচারপতি হিসেবে কৃষ্ণা দেবনাথকে শপথবাক্য পাঠ করান দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, গত দুর্গাপুজোর সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের ঘটনায় সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সরকারের যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসেবে কৃষ্ণা দেবনাথের নিয়োগ কিছুটা হলেও তা ফেরাতে সাহায্য করবে।
১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দেন। প্রথমে মুনসেফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালের পয়লা পহেলা নভেম্বর পদোন্নতি পান জেলা ও দায়রা বিচারক হিসেবে। ১২ বছর জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দু বছর বাদে ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী বিচারপতি হন।
শুধু তাই নয়, দেশের শীর্ষ আদালতের আপিলে বিভাগে গত ৫০ বছরে মাত্র তিন জন মহিলা বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। সেই তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন দেশের প্রথম হিন্দু মহিলা বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। শীর্ষ আদালতের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বাকি দুই মহিলা বিচারপতি হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি জিনাত আরা। দুজনেই অবশ্য অবসর নিয়েছেন। আগামী ২০৩২ সাল পর্যন্ত বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কৃষ্ণা দেবনাথ। এদিন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের পাশাপাশি বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান-ও আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।