নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বোমা হামলার হুমকির প্রেক্ষিতেই বর্ষবরণের রাতে রাজধানীকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে রাতে এ কথা জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম। রাজধানীতে বর্ষবরণের রাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজপথে নেমেছিলেন পুলিশ কমিশনার। গুলশান গোল চত্বরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল আইএস। যদিও বাংলাদেশে আইএসের কোনও অস্তিত্ব নেই। তবু কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বর্ষবরণ উপলক্ষে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার রাজধানীতে যথেষ্ট কড়াকড়ি করেছিল মহানগর পুলিশ। সন্ধের পরে যেমন পানশালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তেমনই রাত আটটার মধ্যে সাধারণ মানুষকে বাড়িতে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একাধিক রাস্তায় যান চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পুলিশি কড়াকড়ির মধ্যেই সাধারণ মানুষ আতশবাজি পুড়িয়ে, ফানুস উড়িয়ে নতুন বছরকে বরণ করেছেন। তবে রাজধানীর ব্যস্তবহুল এলাকা ঘুরে দেখতে গিয়ে মনে হয়েছে, যেন অঘোষিত কার্ফু চলছে।
প্রথমে মনে করা হয়েছিল করোনা সংক্রমণের কারণেই চলতি বছরে বর্ষবরণে ব্যাপক কড়াকড়ির বন্দোবস্থ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। কিন্তু এদিন মধ্যরাতে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, আইএসের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বন্দোবস্থ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আইএসের হুমকি বার্তা পাওয়া গিয়েছে। ওই বার্তায় জঙ্গি সংগঠনটি নতুন বছর বরণ বা বর্ষপূর্তির আয়োজনকে বিধর্মীদের অনুষ্ঠান হিসেবে আখ্যা দিয়ে হুমকি দিয়েছিল, মুসলিম প্রধান কোনও দেশে এই ধরনের অনুষ্ঠান হলে বোমা হামলা চালানো হবে। সংগঠনের অনুসারীদের নির্দেশ দিয়েছে, যে যেখানে আছেন, যতটুকু সামর্থ্য আছে, তা নিয়ে যেন হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশের জন্য কোনও গুরুত্ব বহণ করে না। কারণ, এখানে আইএসের কোনও অস্তিত্ব নেই। কিন্তু অত্যুৎসাহী দু-একজন যদি হামলা করে, সেই আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’