নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দেশে হিন্দুরা যে কতটা সুরক্ষাহীন ফের একবার প্রমাণিত হল। শনিবার সকালে খোদ রাজধানী ঢাকায় টিপ পরার কারণে পুলিশের উর্দিধারীর কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে এক হিন্দু শিক্ষিকাকে। শুধু কটাক্ষই করেননি, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজও করেছেন। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ফের বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
যে গুণধর পুলিশ কর্মী ওই অভব্য আচরণ করেছেন, তাকে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, শনাক্তই করতে পারেনি ঢাকা মহানগর পুলিশ। উল্টে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া দায় এড়ানোর ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘একজন মহিলা পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি খারাপ ব্যবহার করেছেন বলে থানায় অভিযোগ করেছেন। তিনি ওই ব্যক্তির নাম বা পদবি বলতে পারেননি। একটি মোটরবাইকের নম্বর দিয়েছেন। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বাইকটি পুলিশের কিনা।’
কী ঘটেছিল এদিন সকালে? রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার অন্যান্যদিনের মতো হেঁটেই কলেজে যাচ্ছিলেন। আচমকাই পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি তাঁকে লক্ষ্য করে, ‘টিপ পরেছিস কেন’ বলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। প্রকাশ্য রাস্তায় পুলিশের এমন আচরণে খানিকটা হতচকিত হয়ে পড়েন লতা দেবী। সম্বিত ফিরে পেয়ে ওই পুলিশ আধিকারিকের দিকে এগিয়ে যান তিনি। লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা অভিযুক্ত আচমকাই লতাদেবীর পায়ের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে চলে যান।’
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা বাদেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কলেজ শিক্ষিকা লতাদেবী। কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর বাদেও এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে, ভাবতে পারিনি। আমি হিন্দু, টিপ পরা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু আমি কেন যে কেউ চাইলে টিপ পরতে পারেন। এর আগেও হাতের শাঁখা নিয়ে দু-একজন বাজে মন্তব্য করেছেন, তবে তা তেমন গায়ে মাখিনি। কিন্তু আজ পুলিশের উর্দিধারীর কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে আমি শঙ্কিত।’