নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দেশে তরুণ ও যুব প্রজন্মের রক্তে কীভাবে জঙ্গিবাদের বিষ ঢুকেছে তার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনকারী সংস্থা অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) গবেষণায়। এটিইউয়ের (Anti Terrorism Unit) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জঙ্গি কাজকর্মে যুক্তদের ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আর ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ দেশে জঙ্গিদের ৬২ শতাংশের বেশি ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী। শুধু তাই নয়, জঙ্গিবাদের উত্থানের পিছনে মাদ্রাসার (Madrasa) চেয়েও বেশি অবদান মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (Main Stream)। জঙ্গি কাজকর্মে যুক্ত ৬৯ শতাংশই মূলধারার শিক্ষায় শিক্ষিত। আর মাত্র ১৭ শতাংশ মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত।
২০০১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে ধৃত ১,২০৭ জঙ্গির শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান সহ নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা চালিয়েছিল অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (Anti terrorism unit)। আর তাতেই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। গবেষণা অনুযায়ী, দেশে জঙ্গিদের ৫৮ দশমিক ৩০ শতাংশ জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (JMB)-এর অনুসারী। ধৃত ১,২০৭ জঙ্গির মধ্যে ৭১০ জন জেএমবির (JMB) সদস্য। নব্য জেএমবি’র (New JMB) সঙ্গে জড়িত ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। ধৃতদের মধ্যে ১২৫ জন নব্য জেএমবি’র সদস্য। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের 9Ansarullaha Bangla Team) সঙ্গে জড়িত ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, হিযবুত তাহরির (Hizbut Tahari) সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশের।
গত কয়েক দশকে জঙ্গিদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি হয়ে উঠেছে পদ্মা পারের রাজশাহী (Rajshahi)। দেশের অর্ধেক জঙ্গিই রাজশাহী জেলার। তার পরেই রয়েছে উত্তরবঙ্গের রংপুর (Rongpur)। ওই জেলায় ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ জঙ্গির বাস। ইলিশের জেলা হিসেবে পরিচিত বরিশালে (Barishal) জঙ্গি কার্যকলাপ সবচেয়ে কম। ধৃত জঙ্গিদের শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ বরিশাল জেলার। সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় হল, নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান তথা সদস্যরাই জঙ্গিমূলক কাজকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছেন। গবেষণায় উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গিদের ৪৫ শতাংশ নিম্নবিত্ত পরিবারের। আর তিন শতাংশ উচ্চ মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের।