নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দেশের অন্যতম এলিট ফোর্স র্যাবের প্রাক্তন ও বর্তমান ছয় আধিকারিকের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি ঘিরে ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্কে যে যথেষ্টই চিড় ধরেছে, তা ফের একবার বোঝা গেল। শুক্রবারই তিন বছরের দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। দেশ ছাড়ার আগে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারের চেষ্টা করেও সময় পাননি তিনি। অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা যে দেশের সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক প্রধান ভাল মনে মেনে নেননি, মিলারকে সময় না দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে কূটনীতিবিদরা মনে করছেন।
২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন আর্ল রবার্ট মিলার। তিন বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকায় দায়িত্ব পাললের সময়ে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ মহলের সঙ্গে সুসম্পর্কই বজায় রেখে চলেছিলেন। কিন্তু গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত র্যাবের প্রাক্তন ও বর্তমান ছয় আধিকারিকের বিরুদ্ধে আচমকাই নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন রাজস্ব দফতর। ওই নিষেধাজ্ঞা ঘিরে ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সঙ্ঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। আর্ল মিলারকে জরুরি তলব করে মার্কিন রাজস্ব দফতরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সাধারণত বিদায়ী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে থাকেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি দুজনের কেউই। কূটনীতিবিদরা মনে করছেন, র্যাবের উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণেই আর্ল মিলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘করোনা সংক্রমণের কারণেই বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এড়িয়ে গিয়েছেন শেখ হাসিনা।’ তবে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সাক্ষাতের সময় না দিলেও বিমানবন্দরে শিষ্টাচার মেনে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিদায় জানান বিদেশ মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।