নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: জেদের কাছে হার মানল নাড়ির টান। সকালেই ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছিল খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার (Sumaiya Akhtar)। মায়ের মৃত্যুর খবর জানতে পারার পরে বেশ কয়েকবার কাঁদতে-কাঁদতে মূর্চ্ছা গিয়েছিল। কিন্তু পরে মন শক্ত করে পরীক্ষায় বসল। পরীক্ষা দিয়ে এসে মায়ের শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছে। সুমাইয়ার (Sumaiya Akhtar) এমন দায়িত্ব পালনকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটা নাগরিকরা। স্থানীয় বাসিন্দারাও এক রত্তি মেয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই মারণঘাতী ক্যান্সারে (Cancer) ভুগছিলেন খাগড়াছড়ির পানছড়ির রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম। চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে (Chattogram Medical Hospital) চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার সকালেই তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছয় বাড়িতে। এসএসসির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার মধ্যেই মায়ের আকস্মিক মৃত্যুসংবাদে ভেঙে পড়েছিল সুমাইয়া। তার কাছে মনে হচ্ছিল, গোটা পৃথিবীটাই অন্ধকার হয়ে গেল। কাঁদতে-কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি তাকে পানছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জানতে পারার পরেই হাসপাতালে পৌঁছন পানছড়ি থানার (Panchadi Police Station) ওসি আনচারুল করিম (Ancharul Karim)। সুমাইয়াকে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় নিজের গাড়িতে করে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট পর কেন্দ্রে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
সংবাদমাধ্যমে পানছড়ি থানার ওসি জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর পরেও মায়ের মৃত্যুর শোক ভুলতে পারেনি সুমাইয়া। কেন্দ্রে ঢুকে বারবার ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কেঁদেছে। একহাতে চোখের জল মুছেছে, অন্য হাতে উত্তর লিখেছে। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পেরেছে। সুমাইয়া যা করেছে তার জন্য কোনও প্রশংসা যথেষ্ট নয়।’