এই মুহূর্তে




শেখ মুজিবকে নিয়ে আচমকাই উল্টোসুর হাসিনা উচ্ছেদের মাস্টারমাইন্ড মাহফুজের গলায়




নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: তার নির্দেশেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বিজয় সরণিতে থাকা বঙ্গবন্ধু সেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য।

তার নির্দেশেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি।

তার নির্দেশেই সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল চোখের নিমিষে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছিল নব রাজাকার বাহিনী।

তার নির্দেশেই গত বছরের ১৫ অগস্ট ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে শ্রোতা জানাতে যাওয়া সাধারণ মানুষকে প্রকাশ্য রাজপথে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছিল।

তার নির্দেশেই বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবস থেকে শুরু করে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত জাতীয় দিবসকে বাতিল করা হয়েছিল।

আর তিনি নিজেই উপদেষ্টা হয়ে শপথ নেওয়ার পর বঙ্গভবন থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি। কথায়-কথায় প্রয়াত রষ্ট্রপতিকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে চলছিলেন। কিন্তু আচমকাই উল্টো সুর হিযবুত তাহরীর শীর্ষ জঙ্গি নেতা তথা বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনাকে সরানোর মাস্টারমাইন্ড মাহফুজ আলমের গলায়। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফেসবুকে আচমকাই পরাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের হয়েও জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দিয়েছেন। আর বাংলাদেশের নব্য রাজাকার বাহিনীর প্রধানের এমন কথা শুনে মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন ‘আজি এ  কি কথা শুনে মন্থরার মুখে‍!’

পাঠকের জ্ঞাতার্থে মাহফুজের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল-

‘মুক্তিযুদ্ধ মানে বাংলাদেশ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান মানে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের পর কি হয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনা করুন। ইতিহাস পর্যালোচনা করুন। কোন সমস্যা নেই। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কি কি ঘটেছে, তা নিয়েও তর্ক উঠতে পারে। কিন্তু, সেসবই হবে মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিয়ে। যেমন, শেখ মুজিবের ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠা নিয়ে আমরা বলব। উনি ফ্যাসিস্ট ছিলেন। কিন্তু, বাংলাদেশের জন্মে অনেক জাতীয় নেতৃত্বের মতন উনার অবদান অনস্বীকার্য। তাই, আমরা ’৭২ পূর্ব শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রাপ্য গুরুত্ব দিব। মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ ফ্যাসিস্ট হতে পারেন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ছিল আপামর জনগণের লড়াই। মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের ফ্যাসিস্ট, ইসলামফোবিক ও খুনী হয়ে ওঠার কারণে আপনি খোদ মুক্তিযুদ্ধ বা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্বীকার কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন না। এটা রাষ্ট্রের ভিত্তির সাথে গাদ্দারি!’

মাহফুজ আরও লিখেছেন, ‘আমরা ভুলে যাই, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ১০ বছরের ইতিহাস ছিল, ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতবিরোধী, দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার লড়াইয়ের ইতিহাস। কিন্তু, সেজন্য আধিপত্যবাদবিরোধী কোন মুক্তিযোদ্ধা খোদ মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার দু:সাহস করেননি। এখানেই পিকিংপন্থীদের সাথে অন্যদের তফাত। এ দেশের মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও বাংলাদেশের জন্মকে স্বীকার করেই এদেশে রাজনীতি করতে হবে। এর কোন ব্যত্যয় হলে আপনাদের আমরা বাংলাদেশের পক্ষের, গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হিসাবে মেনে নিব না।’

জুলাইয়ের গণভ্যুত্থানের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কোনও সঙ্ঘাত নেই বলে উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেছেন ‘আর, এ গণ অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধের পরে ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান, বাকশাল ২.০ এর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধেরই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা। এ গণ-অভ্যুত্থানে বরং শেখ পরিবার ও মুজিববাদী প্রকল্প থেকে মুক্তিযুদ্ধ রিক্লেইমড হল। বাংলাদেশপন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধপন্থী হতে হবে, তবে এটাও সত্য যে, মুক্তিযুদ্ধ করা অনেকেই ফ্যাসিস্ট ও তাবেদার হয়ে উঠেছিলেন। আজ তারা ছাত্র-জনতার কাছে পরাজিত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা যাবেন, তারা ও মজলুম বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে অতীতে পরাজিত হয়েছেন, সামনেও পরাজিত হতে বাধ্য। জুলাই সুযোগ নিয়ে এসেছে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার। লীগের সাথে বিচারকার্য সম্পন্ন করে রিকন্সাইল করতেও আমরা আগ্রহী ছিলাম। অথচ, দিল্লির আশ্রয়ে থেকে দেশবিরোধী চক্রান্ত করাকেই তারা বেছে নিল। আপনারাও ইতিহাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না। জাতিকে বিভাজন থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই ’৭১ ও ’২৪ কে নি:শর্ত ও নিরঙ্কুশ মেনে এগুতে হবে।

পুনশ্চ: জুলাই বাংলাদেশের ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে ছাত্র নেতৃত্বে সর্বজনের অভ্যুত্থান। মধ্যপন্থী ও ভবিষ্যতমুখী এ অভ্যুত্থানে ডান-বাম, চরম বা নরম পন্থার আশ্রয় নেই। সুতরাং, বাইরের আসকারায় কেউ জুলাই বিপ্লবীদের ট্যাগ বা হুমকি দেয়ার চেষ্টা করবেন না। বরং, জুলাই বিপ্লবীদের সাথে মৈত্রী করুন।

জুলাই গণের লাইনে আছে, ইতিহাসের পক্ষে আছে, আপনারা জুলাইয়ের ছাত্র নেতৃত্বকে হুমকি দেয়া ব্যক্তিরা ইতিহাসের উল্টোদিকে হাঁটছেন। আসুন, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখি এবং রাষ্ট্র সংস্কার করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবাই মিলে অংশগ্রহণ করি।’

 




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লাগাতার ধর্ষণের শিকার, অতিষ্ট হয়ে নরপিশাচ শ্বশুরের যৌনাঙ্গ কেটে দিলেন বউমা

দু’দিনের সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছলেন শেখ হাসিনা

বুথফেরত সমীক্ষায় বাংলায় বিজেপিকে ২১-৩১ আসন দেওয়া তিন ‘হুজুর’কে চিনে নিন

ভোটে জেতার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ‘হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট’ রচনার, কী কথা হল?

‘দিদি নং ওয়ান’ তবে শেষ? জবাবে কী বললেন রচনা

‘ও যা ছোঁয়, তাই সোনা’, রচনার জন্যে গর্বে বুক ফুলে যাচ্ছে স্বামী প্রবাল বসুর

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর