নিজস্ব প্রতিনিধি, বালুরঘাট: কালীপুজোর দিন ঘোর অমাবস্যায় নয় বরং অমবস্যা ছেড়ে গেলেই পুজো শুরু হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের শতাব্দী প্রাচীনতম ঘাটকালী মায়ের পুজো। সবাই যখন শ্যামা মায়ের পুজো সেরে তার ভোগ খেতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন ঠিক তখন বালুরঘাটের প্রাচীনতম ঘাটকালী মায়ের পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়। কয়েক যুগ ধরে এই রীতি মেনেই পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে বালুরঘাটের এই প্রাচীনতম ও জাগ্রত ঘাটকালী মায়ের পুজোয়। সারা বছর এখানে ঘটেই মায়ের আরাধনা হয়। শুধু কালীপুজোর দিন মূর্তিপুজো হয়। তাই এর নাম ঘটকালী পুজো।
কেন অমাবস্য়ার পর এখানে কালীপুজো হয়, তা নিয়ে রয়েছে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। উদ্যোক্তদের কাছ থেকে জানা গেল, শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রেয়ী নদী এক কালে এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বইত। এই ঘাটের পাশ দিয়েই তখন নৌকাযোগে মানুষজনের যাতায়াত ও ব্যবসাপত্র চলত। এই ঘাটকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে কালী মন্দির। পরবর্তীকালে এই মন্দির ঘাটকালী মায়ের থান হিসেবে খ্যাতি পায়। কথিত আছে এই ঘাটকালি মায়ের সাত বোন ছড়িয়ে রয়েছেন গোটা শহরে। তারাও কালীরুপে পুজিত হন। কালী পুজোর দিন দীপান্বিতা অমবস্যা তিথিতে পুরোহিত অন্য সাত বোনের পুজো করেন।
সব শেষে যখন বড়বোন অর্থাৎ ঘাটকালী মায়ের পুজো করতে আসেন ততক্ষনে অমবস্যা ছেড়ে যায়। কিন্তু এদিকে মায়ের পুজোর সব আয়োজন সম্পুর্ণ থাকায় ভক্তজনের কথা চিন্তা করে অমবস্যা পার হয়ে গেলেও পুরহিত মায়ের পুজো করেন। সেই থেকে আজও সেই রীতি মনেই অমবস্যা ছেড়ে যাওয়ার পর পুজো শুরু হয় বালুরঘাট শহরের শতাব্দী প্রাচীন ঘাটকালী মায়ের। মা এখানে খুবই জাগ্রত, তাই প্রত্যেক বছর দুরদুরান্ত থেকে ভক্তজন ছুটে আসেন। ঘটকালী মায়ের এই পুজোয় প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। যদিও এই বছর করোনাবিধি মেনেই পুজো হবে।