নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিবপুর: আজ থেকে ৩৫ বছর আগে মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছিলেন মুসলিম মহিলা শেফালি বেওয়া। তবে পুজো শুরু করাটা মোটেই মসৃণ ছিল না তাঁর কাছে। মালদার হবিবপুরের মধ্যম কেন্দুয়া রেললাইনের কালীপুজে এখন আর শুধু তাঁর নেই, বরং হয়ে গিয়েছে সর্বজনীন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর ৩৫ আগে শেফালি বেওয়া এক কঠিন অসুখে পড়েছিলেন। কোনও চিকিৎসকই রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। এমন সময় মা কালী তাঁর স্বপ্নে আসেন এবং বলেন তাঁর পুজো করলে কঠিন অসুখ থেকে সেরে উঠবেন শেফালি। কিন্ত সেই স্বপ্নাদেশের কথা পাড়া-প্রতিবেশীকে বললে প্রথমে কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি। মুসলিম মহিলা হয়ে কালীপুজো করবেন, তা কেউ মেনে নিতেও পারেনি। উল্টে গ্রামজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরইমধ্যে একদিন শেফালির শরীরে মা কালী ভর করেন। যা দেখে রীতিমতো শিউড়ে ওঠে গ্রামবাসী। এরপরই পুজোর ছাড়পত্র মেলে এলাকাবাসীর থেকে।
গ্রামবাসীরাই মিলিতভাবে রেললাইনের ধারে মা কালীর একটি বেদি করে দিয়েছেন। সেখানে নিত্যপুজো হয়। আর এই কালীপুজোর দিন মূর্তি পুজো করা হয়। টানা ১৫ দিন ধরে এই পুজো চলে। তারপর সামনের পুকুরে মূর্তি বিসর্জন করা হয়। শেফালির নাম থেকে এই পুজোর নাম হয়ে গিয়েছে শেফালি-কালী পুজো। এখানেই শেষ নয়, পুজোয় বসে শেফালি বেওয়ার যাই বলেন তাই অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। যে কারণে এলাকার মানুষ বিশ্বাস করেন, শেফালি বেওয়ারের সঙ্গে মা কালীর আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। আর আই এই পুজোকে কেন্দ্র করে হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন। সংখ্যালঘু মহিলার মা কালীর প্রতি প্রেমভক্তি সকলকেই আকর্ষণ করে।