এই মুহূর্তে




ঘন জঙ্গলের মধ্যেই শুরু কালী সাধনা, এই মায়ের পুজোয় রয়েছে বিশেষ রীতি

Courtesy - Google




নিজস্ব প্রতিনিধি: স্থানীয়রা বলেন এই গ্রাম মা কালীর আশীর্বাদ ধন্য। তাঁর নামেই গ্রামের নামকরণ ‘কালীকাপুর’(Kalikapur)। যখন এই পুজোর সূচনা হয় তখন আশেপাশে ছিল ঘন জঙ্গল। কানা দামোদর নদী(Damodar River) তখন স্রোতস্বিনী। গ্রামের ঠিক পাশ দিয়েই বইত এই নদী। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কানা নদীর অবস্থান বদলেছে। তবে এই গ্রামে কিভাবে শুরু হল মা কালীর আরাধনা সেই কাহিনী আরও চমকপ্রদ। বর্তমানে যেখানে জনবহুল গ্রাম, আগে সেই স্থানে ছিল ঘন কচু বন। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণীদের উপদ্রব ছিল সাধারণ ঘটনা। আশেপাশের কেউই এই কচু বনের গাঢ় জঙ্গলে ঢোকার সাহস পেতেন না। জনশ্রুতি থেকে শোনা যায়, এই জঙ্গলের মধ্যে বসবাস করতেন এক কাপালিক। তিনি ছিলেন ঘোর কালীভক্ত। জঙ্গলে একাকী থেকেই তিনি মা কালীর সাধনা করতেন।

সময়টা ছিল বর্ধমান রাজার রাজত্বকাল। কথিত রয়েছে, কাপালিকের অবর্তমানে রাজার আদেশ মতোই মা কালীকে সেবা করার দ্বায়িত্ব পেয়েছিল বর্ধমানের ঘোষ পরিবার। সেই সময় বর্ধমান রাজসভার নবরত্নের একজন ছিলেন তিলক রাম ঘোষ। বর্ধমান থেকে রাজার আদেশ পেয়ে মা কালীর সেবার উদ্দেশ্যে সপরিবারে হাওড়ার উদয়নারায়নপুরে বসবাসের জন্য চলে আসেন ঘোষ পরিবার। তৎকালীন ঘোষ পরিবার ‘ভাট’ উপাধি পেয়েছিল রাজার কাছে। হাওড়া তথা ভরশুট পরগনায় এই উপাধি ছিল যথেষ্ট সম্মানের। কালক্রমে সেখানে বসতি বৃদ্ধি পেতে থাকে।

যদিও মায়ের পুজোর স্থানটি ঘন জঙ্গলে অরণ্যাবৃত হওয়ায় সেখান থেকে কিছুটা দূরে বসবাস শুরু করেছিল ঘোষ পরিবার। বর্তমানে সেই স্থান দেবীপুর গ্রাম নামে পরিচিত। কিন্তু পুজোর জন্য জঙ্গলের নির্দিষ্ট স্থানেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে যে স্থানে কালী মন্দির রয়েছে তখন সেখানে ঘন জঙ্গল থাকার কারণে পুজো করার জন্য পুরোহিতের সঙ্গে লেঠেল নিয়ে আসা হতো বন্য পশুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। মন্দির সংলগ্ন ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে বর্তমানে সেখানে গড়ে উঠেছে ঘন জনবসতি। এই কালী মন্দিরকে কেন্দ্র করে জনবসতি গড়ে ওঠার কারণেই গ্রামের নামকরণ কালীকাপুর।

এই মায়ের পুজোয় লক্ষ্য করা যায় বেশ কিছু বিশেষ রীতি। একদম সূচনা কালে কোনও মূর্তি ছাড়াই ঘট প্রতিষ্ঠা করে মা কালীর পুজো হতো। সেই ঘট নাকি আজও মন্দিরে রয়েছে বলেই জানান বর্তমান পুরোহিত। একেবারে আদি নিয়ম মেনেই হয় পুজো(Traditional Kali Pujo)। জানা যায়, মন্দিরে কষ্ঠি পাথরের মায়ের যে মূর্তিটি রয়েছে তা প্রায় দু’শো বছর প্রাচীন। একটা সময় অবধি এই মায়ের পুজো ছাড়া অন্য সকল পুজো নিষিদ্ধ ছিল এই গ্রামে। তবে এখন সেই নিয়ম খর্ব হয়েছে। কালীপুজোর সময় জাঁকজমক সহকারে উৎসব পালন করে থাকেন গ্রামবাসীরা। সারা রাত ধরে চলে মায়ের পুজো। দেবীমূর্তি কষ্টি পাথরের হওয়ায় এখানে বির্সজনের কোনও রীতি নেই, তবে বিশেষ বিশেষ তিথিতে মাকে স্নান করানো হয়। এইভাবেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে হাওড়ার কালীকাপুরের কালীপুজো, যা ক্রমেই হয়ে উঠেছে এলাকার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

রাজার নির্দেশে চাঁচলের ৩৫০ বছরের রীতি মেনে কালী প্রতিমা কাঁধে নিয়ে দৌড় ভক্তদের

মা সেজেছেন দশ হাত-পায়ে, বসিরহাটেই এবার উজ্জয়ণের মহাকালেশ্বর মন্দির

মা কালীকে বিসর্জন দিতে গিয়ে কালীর কোলে বিলীন হয়েছিলেন রামপ্রসাদ 

৪০০ বছর আগে ডাকাতদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই কালী পুজো

জানুন দক্ষিণেশ্বরে কালীপুজোর মহাভোগে কী থাকছে, রইল বিশেষ প্রণালী

ঘরে উপচে পড়বে ধন-সম্পদ, জেনে নিন দীপাবলিতে লক্ষীপুজোর সময়কাল এবং নিয়ম

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর