এই মুহূর্তে

বহু রূপে ধরা দেন ভক্তের কাছে, জানেন কী কোন কোন রূপে পুজিতা হন দেবী কালী

নিজস্ব প্রতিনিধি : কালী শব্দের অর্থ হল,কালের রচনা করেছেন যিনি, বা কাল বা সময়ের থেকেও উচ্চতর। কালের সীমানা পার করেছেন যিনি তিনিই কালী নামে পরিচিত। শাক্তমতে বলা হয় কালী হল বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। স্বয়ং মহাদেবের ক্রোধ থেকে জন্ম নিয়েছে মহাকালীর। যখনই যখনই অন্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে তখনই পাপের বিনাশ করতে দেবী কালিরূপে অবতীর্ণ হয়েছে। আপনি কী জানেন দেবী কালীর কয়টি রূপে পুজিতা হন ? কালী হল নয় প্রকার। দক্ষিণাকালী বা শ্যামাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্রীকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডা, মহাকালী, শ্মশানকালী।

দক্ষিণাকালী বা শ্যামাকালী : দেবীর সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ মূর্তি হল দক্ষিণাকালী। মনে করা হয়, দক্ষিণদিকের অধিপতি যম যে কালীর ভয়ে পলায়ন করেন, তিনিই দক্ষিণাকালী। দেবী করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী, চতুর্ভুজা, মুণ্ডমালাবিভূষিতা। তাঁর বামকরযুগলে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড ও খড়্গ, দক্ষিণকরের একটিতে বর ও অপরটিতে অভয় মুদ্রা। তাঁর গাত্রবর্ণ মহামেঘের ন্যায় গভীর, ও রক্তপানকারিনী। দেবীর ডান পা মহাদেবের বুকে থাকে।

সিদ্ধকালী : এইরূপে কালী গৃহস্থের বাড়িতে পুজিতা হন না।এই রূপে মূলত সিদ্ধ সাধকের আরাধ্যা দেবী হিসেবে পুজিতা হন। সিদ্ধকালীর ডান পা শিবের বুকে ও বাম পা মহাদেবের উরুর মাঝখানে থাকে।

গুহ্যকালী : সাধকদের আরাধ্যা দেবী কালীর আরও একটি রুপ হল গুহ্যকালী। এই রূপে দেবীর লোলজিহ্বা ও দ্বিভুজা দেবীর গলায় পঞ্চাশটি নরমুণ্ডের মালা, দেহে ক্ষুদ্র কৃষ্ণবস্ত্র, স্কন্ধে নাগযজ্ঞোপবীত, মস্তকে জটা ও অর্ধচন্দ্র, কর্ণে শবদেহরূপী অলংকার। নারদাদিঋষিগণ শিবমোহিনী গুহ্যকালীর সেবা করেন।

মহাকালী : কালিকা পুরাণে মহাকালীকে আদ্যাশক্তি, দশবক্ত্রা, দশভূজা, দশপাদা ও ত্রিংশল্লোচনা রূপে কল্পনা করা হয়েছে। তন্ত্রসার গ্রন্থমতে, মহাকালী পঞ্চবক্ত্রা ও পঞ্চদশনয়না। তাঁর দশ হাতে রয়েছে যথাক্রমে খড়্গ, চক্র, গদা, ধনুক, বাণ, পরিঘ, শূল, ভুশুণ্ডী, নরমুণ্ড ও শঙ্খ।

ভদ্রকালী : ভদ্র শব্দের অর্থ কল্যাণ এবং কাল শব্দের অর্থ শেষ সময়। যিনি মৃত্যুকালে জীবের মঙ্গলবিধান করেন, তিনিই হলেন ভদ্রকালী।তিনি সর্বদা ক্ষুধিতা, মুক্তকেশী। দেখে মনে হবে, তিনি জগৎকে গ্রাস করছেন, তাঁর হাতে জ্বলন্ত অগ্নিশিখা ও পাশযুগ্ম।

চামুণ্ডাকালী : দেবীভাগবত পুরাণ ও মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে, একবার তিনি চণ্ড ও মুণ্ড নামক দুই অসুরকে বধ করেছিলেন।বলা হয় দেবী দুর্গার ভ্রুকুটিকুটিল ললাট থেকে চামুণ্ডার উৎপত্তি।দুর্গাপুজোর মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে আয়োজিত সন্ধিপুজোর সময় দেবী চামুণ্ডার পুজো করা হয়।

শ্মশানকালী : বলা হয় কালীর এই রূপ হল শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই রূপে দেবীর গায়ের রং কাজলের মতো কালো, চোখদুটি রক্তপিঙ্গল বর্ণের, আলুলায়িত কেশ, দেহ শুকনো ও ভয়ঙ্কর, তাঁর ডান হাতে সদ্য ছিন্ন নরমুণ্ড। দেবীর এই রূপও গৃহস্থ বাড়িতে পুজো করা হয় না। এটি সাধকের আরাধ্যা দেবী রূপে পুজিতা হয়ে থাকেন।

আরও পড়ুন : জেনে নিন মা কালী বিবস্ত্র থাকার পেছনে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে ?

শ্রীকালী : দেবীর অপর একটি রূপ হল শ্রীকালী।এই রূপে দারুক নামে এক অসুরকে বিনাশ করে। বলা হয় যে এই রূপে দেবী একবার মহাদেবকে শিশু রূপে নিজ দুগ্ধ পান করান।

আদ্যাকালী : এই রূপে দেবীর গায়ের রং মেঘের মতো ঘন নীল, কপালে চন্দ্ররেখা, ত্রিনেত্রা, রক্তবস্ত্র পরিধান করে থাকে। এই রূপে পুষ্পের মিষ্টি সুধা পান করে মহাকালের নৃত্য দেখে আনন্দ পান তিনি।

রক্ষাকালী : রক্ষাকালী হল দক্ষিণাকালীরই একটি নাগরিক রূপ। প্রাচীন কালে নগর বা লোকালয়ের রক্ষার জন্য এই দেবীর পুজো করা হতো। দেবীর পূজা মন্ত্রও ভিন্ন হয়। আবার স্থানভেদে রক্ষাকালীর বাহন সিংহ হয়ে থাকে।

 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

রাজার নির্দেশে চাঁচলের ৩৫০ বছরের রীতি মেনে কালী প্রতিমা কাঁধে নিয়ে দৌড় ভক্তদের

মা সেজেছেন দশ হাত-পায়ে, বসিরহাটেই এবার উজ্জয়ণের মহাকালেশ্বর মন্দির

মা কালীকে বিসর্জন দিতে গিয়ে কালীর কোলে বিলীন হয়েছিলেন রামপ্রসাদ 

৪০০ বছর আগে ডাকাতদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই কালী পুজো

জানুন দক্ষিণেশ্বরে কালীপুজোর মহাভোগে কী থাকছে, রইল বিশেষ প্রণালী

ঘরে উপচে পড়বে ধন-সম্পদ, জেনে নিন দীপাবলিতে লক্ষীপুজোর সময়কাল এবং নিয়ম

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর