নিজস্ব প্রতিনিধি: কোভিডের পরে এবার মাঙ্কিপক্স(Monkey Pox)। বিশ্বজুড়ে ক্রমশ ত্রাস হয়ে উঠছে এই রোগ। যদিও এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর কথা শোনা যায়নি। গত বেশ কিছু দিন ধরেই চর্চায় ছিল, এদেশে(India) মাঙ্কিপক্স থাবা বসাতে পারবে কী পারবে না তা নিয়ে। থাবা বসালেও তা কী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়বে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। এর মধ্যেই যোগী রাজ্যে এক শিশুর দেহে কিছু উপসর্গ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অনেকেই মনে করছেন এ দেশে পা রেখেই ফেলেছে মাঙ্কিপক্স। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের(Uttar Pradesh) গাজিয়াবাদে(Gajiabad) একটি পাঁচ বছরের শিশুর শরীরে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সে রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই ওই শিশুর শরীরে চুলকানির সমস্যা হচ্ছিল। তারপর হঠাৎ করেই ফোস্কার মতো দাগ দেখা যায় তার শরীরে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শনিবার তার নমুনা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষাগারে। যদিও গত এক মাসে বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাসও নেই ওই শিশুর পরিবারের। তবুও মাঙ্কিপক্সের মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ায় পরীক্ষা করা হবে তার নমুনা।
মাঙ্কিপক্স নিয়ে কার্যত আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বে। একই সঙ্গে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার পিছনে সমকামী পুরুষদের(Gay) দিকে আঙুল তুলছে কেউ কেউ। মাঙ্কিপক্সের শিকার হওয়া মানুষদের একতা অংশ যে উভকামী বা সমকামী সেটা সামনে এসেছে। তাই অনেকেই মনে করছেন তাঁদের মাধ্যমেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে একের পর এক দেশে। যদিও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’ জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্সের শিকার হওয়া কিছু মানুষ উভকামী(Bisexual) বা সমকামী। কিন্তু তাঁরাই এই রোগের ধারক বা বাহল এমনটা নয়। আর এখানেই ভারতকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে। কেননা এদেশের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। ভুয়ো খবরকে ভিত্তি করে কাউকে পিটিয়ে মেরে দেওয়া বা সামাজিক ভাবে বয়কট করার মতো ক্ষেত্রে এই এদেশের জুড়ি মেলা ভার। একই সঙ্গে নিজের উভকামিতা বা সমকামিতা বোধ নিয়ে এদেশে প্রকাশ্যে স্বীকার না করা মানুষের সংখ্যাও অনেক বেশি। আর তাই মাঙ্কিপক্স নিয়ে একতা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে কার্যত মাঙ্কিপক্স গোষ্ঠী সংক্রমণের চেহারা নিয়েছে। আফ্রিকার বাইরে পশ্চিমের দেশগুলোতেও ক্রমশই বাড়ছে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ। ভারতে এখনও মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের হদিশ না মিললেও, দেশের সব রাজ্যগুলিকেই সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর এই নিয়ে রাজ্যগুলিকে বিশেষ নির্দেশিকাও পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত দেশগুলিতে গত ২১ দিনের মধ্যে যারা ঘুরে এসেছেন সেই সব নাগরিকদের মাঙ্কিপক্সের কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে তাঁদের আইসোলেশনে রাখতে হবে। ওই ব্যক্তি কতদিন আইসলেশনে থাকবেন সেটা তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি দেখে ঠিক করবেন মেডিকেল অফিসার। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাঁদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে। কারও শরীরে উপসর্গ দেখা দিলে তাঁর নমুনাও পরীক্ষা করতে পাঠাতে হবে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে।