নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: এনডিএ’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্বেও বিভিন্ন বান্ধব দলের সমর্থনে সোমবার রাজ্যসভাতেও দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘বিতর্কিত’ বিল পাশ করিয়ে নিল মোদি সরকার। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১৩১টি আর বিপক্ষে ১০২টি। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার ফলে দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আইন চালু হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে।
দিল্লির আমলাদের পোস্টিং ও বদলি সংক্রান্ত ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দিল্লির আম আদমি সরকারের লড়াই গড়িয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালতে। গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মত ভাবে জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। ওই রায়ের সাতদিন বাদে গত ১৯ মে আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্র। ওই অধ্যাদেশে বলা হয়, দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। ওই অধ্যাদেশ ঘিরে আপ এবং বিজেপির বাগ্যুদ্ধ চরমে পৌঁছয়। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির পাশে দাঁড়ায় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।
বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই গত ৩ অগস্ট লোকসভায় ‘বিতর্কিত’ বিল পাশ করিয়ে নিতে সক্ষম হয় বিজেপি সরকার। বিল পাশ হওয়ার পরই লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেছিলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদরা। এদিন রাজ্যসভায় ওই ‘বিতর্কিত’ বিল পেশ করা হয়। জবাবি ভাষণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘সুশাসনের জন্য দিল্লি আমলা নিয়ন্ত্রণ বিল আনা হয়েছে। অতীতে দিল্লির কোনও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতার জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করেননি। কিন্তু আপ সরকার শুরু থেকেই সঙ্ঘাতে জড়িয়েছে। কিন্তু যারা সঙ্ঘাতে জড়াচ্ছেন তাদের স্মরণে থাকা উচিত, দিল্লি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য নয়। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল।’ দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা মোদি সরকাত দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণ বিল নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সাংসদরা। সেই অভিযোগও নস্যাৎ করেন শাহ। বিরোধীদের দাবি মেনে নিয়ে বিল নিয়ে ভোটাভুটির নির্দেশ দেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কাগজেই ভোট নেওয়া হয়।