নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একদিকে যখন এশিয়া, ইউরোপের একাধিক দেশে আবার নতুন করে জাঁকিয়ে বসছে করোনা মহামারি, ঠিক তখনই আগামী ৩১ মার্চ থেকে কেন্দ্র দ্বারা কার্যকর করা সমস্ত করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে করোনা সতর্কতা মেনে এখনও সমগ্র দেশজুড়েই মুখে মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নিয়ম কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, আজ থেকে ঠিক দুই বছর আগে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ দেশে যখন করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠিক তখনই দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয়েছিল লকডাউন এবং ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় এনে ঘোষণা করা হয়েছিল একাধিক করোনা বিধি। এরপর দেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় একে একে অনেক করোনা বিধিই শিথিল করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ বহাল ছিল দেশজুড়ে। কিন্তু আগামী ৩১ মার্চের পর থেকে সেই দেশের কোনও রাজ্য কিংবা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলেই আর কোনও করোনা বিধিনিষেধ থাকবে না।
জানা যাচ্ছে, দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। এছাড়াও শেষ ২৪ ঘণ্টার দেশের করোনা পরিস্থিতির ওপর করা নজর রেখে এবং প্রতিটি রাজ্যের এই মুহূর্তের অবস্থা পর্যালোচনা করার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই প্রসঙ্গে অজয় ভাল্লা বলেছেন যে, গত ২৪ মাসে, মহামারী পরিচালনার বিভিন্ন দিক যেমন ডায়াগনস্টিকস, নজরদারি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিত্সা, টিকাকরণ, হাসপাতালের পরিকাঠামোর সব কিছুর ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিখেছে এই দেশ। এছাড়াও, সাধারণ জনগণের মধ্যেও এখন কোভিড-উপযুক্ত আচরণ সম্পর্কে অনেক উচ্চ স্তরের সচেতনতা গড়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় আর নতুন কোনও বিধি নিষেধের প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছেন তিনি।
তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। এর মধ্যে অন্যতম হল আমাদের দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিশ্বের একাধিক দেশে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই চিন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একাধিক দেশেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চিনে ফের শুরু হয়েছে লকডাউন।এমতাবস্থায় দেশ থকে সমস্ত করোনা বিধিনিষেধ সরিয়ে ফেলা আদৌ ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।