নিজস্ব প্রতিনিধি, লখনউ: মুঘল সম্রাট শাহজাহানের নির্মিত ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ তাজমহলের রহস্যঘেরা ২২ বন্ধ কক্ষ খোলার দাবি খারিজ করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, ২২ বন্ধ কক্ষ খোলার দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়েরকারী বিজেপি নেতা রজনীশ সিংকে তুলোধনা করেছেন বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায় ও বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী। তীব্র তিরস্কার বলছেন, ‘তাজমহলের ২২ বন্ধ কক্ষ খোলার দাবি জানানোর আপনি কে? তাজমহল আপনার কোন অধিকার হরণ করেছে? জনস্বার্থ মামলার নামে আদালতের সঙ্গে তামাশা করবেন না ভবিষ্যতে।’ হাইকোর্টে আবেদন খারিজ হওয়ার পরেও ক্ষান্ত দিচ্ছেন না জনস্বার্থ মামলা দায়েরকারীর আইনজীবী রুদ্র বিক্রম সিং। তিনি জানিয়েছেন, ২২ বন্ধ কক্ষের মধ্যে কী রয়েছে তা জানার আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দরজায় কড়া নাড়া হবে।
মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর প্রিয়তমা মুমতাজের জন্য নির্মাণ করেছিলেন তাজমহল। ৪০০ বছর ধরে ভালবাসার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্বেতশুভ্র স্মৃতিসৌধ। দীর্ঘ সময় ধরেই এক রহস্যের বেড়াজালে নিজেকে আবৃত করে রেখেছে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য। রাজকীয় সমাধিস্তম্ভে ২২টি কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন। কক্ষের ভিতরে কী রয়েছে তা জানতেই যুগ যুগ ধরে কৌতূহল! সেই রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি নেতা রজনীশ সিং।
অবশ্য পুরাতত্ত্ববিদরা মনে করছেন, পাথরের তৈরি ঘরগুলিতে বেশি ভিড় হলে নিঃশ্বাস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মূল কাঠামোর শ্বেতপাথরের ক্ষতি হতে পারে। সে কারণেই ওই ঘরগুলি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
এদিন শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের দুই বিচারপতি আবেদনকারী বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আপনি বলতে চাইছেন, তাজমহল শাহজাহান বানাননি। তা হলে কে বানিয়েছিলেন আগে তা নিয়ে পড়াশোনা করুন। যে বিষয়ে আপনার কোনও জ্ঞান নেই, তা নিয়ে মামলা করতে এসেছেন? আগে গিয়ে এম এ করুন, পিএইচডি করুন, গবেষণা করুন। যদি আপনাকে কোনও সংস্থা গবেষণা করতে না দেয়, তখন আমাদের কাছে আসবেন। আজ তাজমহলের বন্ধ কক্ষ খোলার দাবি নিয়ে এসেছেন। আগামিকাল তো এসে বলবেন বিচারপতিদের চেম্বারে ঢোকার অনুমতি চাই।’