নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের বৈতরণী পার হতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) হাতিয়ার করছে মোদি সরকার। আগামী মার্চ মাস থেকেই দেশজুড়ে সিএএ চালু হয়ে যাবে বলে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত বিশেষ ওয়েব পোর্টাল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বেশ কয়েক দফায় ওই ওয়েব পোর্টালের ড্রাই রান (মহড়া) চালানো হয়েছে। ওই ওয়েব পোর্টালেই বাংলাদেশ-পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে তাড়া খেয়ে উদ্বাস্তু হয়ে আসা সাধারণ মানুষ নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া-সহ বিভিন্ন রাজ্যের উদ্বাস্তু ভোটারদের ভোট পকেটে পুরতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে হাতিয়ার করছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
কেন্দ্রে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ২০১৬ সালে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেছিল। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনকে খানিকটা সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-শিখ-পার্সি ও জৈনদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ওই বিল আনা হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে নিজেদের প্রচারে ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ-সহ আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া রাজ্যগুলিতে ফায়দা লুটেছিল বিজেপি। ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর লোকসভায় এবং পরের দিন ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল বিল। সংসদের দুই কক্ষ ছাড়পত্র দেওয়ায় ১২ ডিসেম্বর বিলে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পরের বছর ১০ জানুয়ারি কার্যকরও হয় আইন। নয়া আইনের প্রতিবাদে গোটা দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। উত্তাল হয়ে পড়ে একাধিক রাজ্য।
যদিও করোনা অতিমারীর কারণে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিভিন্ন ধারা প্রণয়নের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। যদিও গত দুই বছর ধরে ৯ রাজ্যের ৩০ জেলার জেলাশাসককে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।