নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জি-২০ সম্মেলনে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পরও সম্পর্ক সেই অধরাই রয়েই গেল। ভারত থেকে কানাডার কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গে কানাডারই পক্ষ নিল আমেরিকা ও ব্রিটেন। কানাডার কূটনীতিক না সরানোর জন্য রীতিমত আর্জি জানিয়েছে আমেরিকা ও ব্রিটেন। ঘটনাচক্রে, আমেরিকা এবং ব্রিটেন ভারতকে ১৯৬১ সালের ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত কূটনীতির সাধারণ শর্তগুলির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, “ভারত থেকে কানাডার কূটনীতিকদের চলে যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। ভারতে কানাডার কূটনৈতিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার জন্য ভারত সরকারের দাবির প্রতিক্রিয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।মতভেদ নিরসনের জন্য কূটনীতিকদের প্রয়োজন। আমরা ভারত সরকারকে কানাডার কূটনৈতিক উপস্থিতি হ্রাস করার জন্য এবং কানাডার চলমান তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা আশা করি ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ১৯৬১ সালের ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত কূটনীতির সাধারণ শর্তগুলির দায়বদ্ধতা বজায় রাখবে। “ যদিও প্রকাশ্যে বিরোধিতা কেউই করেননি।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ভারত সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত নই যার ফলে বেশ কয়েকজন কানাডিয়ান কূটনীতিক ভারত ত্যাগ করেছে।”
কানাডায় খলিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভারতের যোগসূত্রের দাবি করেছে কানাডা। এরপরেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারতের কূটনীতিকদের সরানোর পর ভারতও পাল্টা একই পদক্ষেপ নিয়েছে। গত মাসে নয়াদিল্লি অটোয়াকে ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বলে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি জারি করে ভারত থেকে তাদের কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা জানায় কানাডার বিদেশ মন্ত্রক।
সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ভারত সরকার জানিয়েছে ভারত থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে ২০ অক্টোবরের মধ্যে। আর তার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চণ্ডীগড়, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুতে কানাডার যে সব উপদূতাবাস রয়েছে, সেগুলির কাজ আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।“
শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে ট্রুডো বলেন, “ভারত সরকার ভারত তো বটেই, কানাডারও লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে অভাবনীয় ভাবে কঠিন করে তুলছে। কূটনীতির মৌলিক ধারণাকে লঙ্ঘন করেই তারা এই ধরনের কাজ করে যাচ্ছে।” অন্যদিকে ভারতের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় ভারতে কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানো উচিত কানাডার।