নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯৫৮ সালে উত্তরাখণ্ডের পৌরি গারওয়ালে জন্মগ্রহন করেছিলেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। বারা লক্ষণ সিং রাওয়াত তাঁর মতই ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল ছিলেন, তবে সেনাপ্রধান ছিলেন না। ফলে সেনা পরিবারে জন্ম বিপিন রাওয়াত লেখাপড়া শেষে যোগ দেন ন্যাশনাল মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। সেখানে ভালো ফল করার জন্য পেয়েছিলেন ‘সম্মানের তরবারী’ (Sword of Honour)। তার আগে দেরাদুনের ক্যামব্রিয়াল হল স্কুল, সিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুলে শেষ করেন স্কুল জীবন। ন্যাশনাল মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করে তামিলনাড়ুর ‘প্রতিরক্ষা সেবা স্টাফ কলেজ’ থেকে স্টাফ কোর্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ট লেভেনওয়ার্থ থেকে ‘উচ্চতর আদেশ প্রশিক্ষণ’ নিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি তামিলনাড়ুর মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিরক্ষাবিদ্যায় এমফিল করেন।
বিপিন রাওয়াতের বাবা লক্ষণ সিং রাওয়াত ছিলেন ৫/১১ গোর্খা রাইফেলসে। ছেলে বিপিন রাওয়াতও ওই বাহিনীতেই শুরু করেন কর্মজীবন। দিনটি ছিল ১৯৭৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এরপর বহু দায়িত্ব সামলানোর পর তাঁকেই দেশের ২৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয় ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর। তবে সেনাপ্রধান হওয়ার ক্ষেত্রে দুজন উর্ধ্বতন জেনারেলকে টপকিয়ে তাঁকেই সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করে সরকার। যা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। পরে তিনিই হয়েছিলেন ভারতীয় সেনার প্রথম সর্বাধিনায়ক (Chief of Defence Staff)। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বিপিন রাওয়াত ভারতীয় সেনার সর্বাধিনায়কের পদ অলঙ্কৃত করেন। এরপর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুর কুন্নুরে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক মৃত্যু হয় বিপিন রাওয়াতের।
বুধবার দুপুরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর চপার এমআই- ১৭ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেসময় ১৩ জন সেনা আধিকারিকের সঙ্গে ছিলেন বিপিন রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতও। তিনি পদাধিকার বলে সেনাবাহিনীর ওয়েলফেয়ার সংগঠনের চেয়ারপার্সন। তাঁরা দুজনেই রেখে গেলেন দুই মেয়েকে। এক মেয়ের নাম কৃতিকা রাওয়াত। বিপিন রাওয়াতের বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রসংঘের হয়ে কঙ্গোতে শান্তিরক্ষা অভিযানেও অংশ নেন তিনি। তাঁর মুকুটের সেরা পালক হচ্ছে ২০১৫ সালে মায়ানমারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। শহিদ জওয়ানদের বদলা নিয়ে ওই হানায় খতম করা হয় কমপক্ষে ৩৮ জন জঙ্গিকে।