এই মুহূর্তে




মেয়ের ময়নাতদন্ত থেকে শেষকৃত্য সব ক্ষেত্রেই দিতে হয়েছে ঘুষ, শোকাহত বাবার বিস্ফোরক অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। শোকের সময় পাশে থাকার বদলে মেয়ের ময়নাতদন্ত থেকে শুরু করে শেষকৃত্য সব ক্ষেত্রে ঠিক কীভাবে ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল সেই তথ্য সামনে আনলেন বেঙ্গালুরুর একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। তিনি অভিযোগ করেছেন যে,মেয়ের মৃত্যুর পর, তাকে প্রতিটি পর্যায়ে ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।

ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের (বিপিসিএল) প্রাক্তন প্রধান আর্থিক কর্তা শিবকুমার কে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লিঙ্কডইনে পোস্টটি করলেও তা বর্তমানে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। এই পোস্ট সামনে আসার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, শিবকুমারের ৩৪ বছর বয়সী মেয়ে অক্ষয়া শিবকুমারের ১৮ সেপ্টেম্বর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়। পোস্টে শিবকুমার অভিযোগ করেছেন যে তাকে প্রথমে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ঘুষ দিতে বলা হয়েছিল, তারপর এফআইআর এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য পুলিশকে ঘুষ দিতে বলা হয়েছিল। এমনকি শ্মশানে ঘুষের জন্য অর্থ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। এখানেই শেষ নয় শেষ কৃত্যের পর শহরের পৌর সংস্থা ব্রুহাত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে (বিবিএমপি) তার মেয়ের মৃত্যু শংসাপত্রের জন্য অর্থ দিতে হয়েছিল।

বিপিসিএল-এর প্রাক্তন কর্তা আরও অভিযোগ করেছেন যে “বেলান্দুর থানার একজন এসআই এতটাই অভদ্র ছিলেন যে, তার একমাত্র সন্তান হারানো বাবার প্রতি তার কোনও সহানুভূতি ছিল না।” এই ঘটনার পরে শিবকুমার জানান তাঁর ঘুষ দেওয়ার সামর্থ্যের কারণেই তিনি ঘুষ দিতে পেরেছিলেন। তবে সেই সঙ্গেই তিনি ভাবেন তাঁর ক্ষমতা থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে একজন দরিদ্র ব্যক্তি কী করবে। সেই কথা ভেবেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ জানান। শিবকুমারের মুছে ফেলা পোস্টের স্ক্রিনশট ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ডিসিপি হোয়াইটফিল্ড একটি পোস্টে জানিয়েছে, “শিবকুমারের টুইটে উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত, বেল্লান্দুর থানার একজন পিএসআই এবং একজন পুলিশ কনস্টেবলকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।” পুলিশ আরও জানিয়েছে, “পুলিশ কোনও অবস্থাতেই এই ধরণের অশালীন বা অনুপযুক্ত আচরণ সহ্য করবে না।”

এই পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দুর্নীতির সমালোচনা করেছেন। অনেকে জবাবদিহিতার অভাব এবং সমাজ কি পিছিয়ে পড়ছে বলে প্রশ্ন তুলেছেন। একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে পুলিশ এবং সরকারি কর্মকর্তারাও এতটা সংবেদনশীল নয়। মানব সমাজে তাদের কোনও স্থান নেই। তাদের জেলে পাঠানো উচিত।” আরেকজন প্রশ্ন করেন, “আমি মনে করেছিলাম যে ভারতে এই ধরণের ঘুষ আর ঘটছে না। আমরা কি পিছনের দিকে যাচ্ছি?” আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, “এর কারণ হল মানুষ অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে অর্থকে বেশি মূল্য দিতে শুরু করেছে। তাদেরকে সৎ কর্মকর্তা বলার চেয়ে তারা তাদেরকে ধনী বলতে পছন্দ করে। কারণ সমাজ এটি দাবি করে। এমনকি স্ত্রী/বাবা/সন্তানরাও তাদের উপার্জনের অর্থের উপর ভিত্তি করে সম্মান দিচ্ছে। আমরা সমাজ হিসেবে ডুবে যাচ্ছি।”

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লালুর পরিবার ভেঙে চুরমার, রোহিনীর পর পটনার বাড়ি ছাড়লেন আরজেডি সুপ্রিমোর ৩ কন্যা

বাংলার মনীষীদের কলুষিত করতে চাইছে বিজেপি, কটাক্ষ শশী পাঁজার

বিলাসবহুল হোটেলের ম্যানেজারকে নগ্ন করে ধাতব পাইপ দিয়ে মারধর, ভিডিও ভাইরাল হতেই গ্রেফতার মালিক

‘SIR-এর অতিরিক্ত কাজের চাপ’, এবার বিএলও-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল কেরলে

জন্মদিন খেয়ে গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন ৫ বন্ধু, কিন্তু মাঝপথেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা, সব শেষ…

২১ বছরের বিধবা প্রেমিকাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ প্রেমিক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ