নিজস্ব প্রতিনিধি: আশা ছিল। আকাঙ্ক্ষা ছিল। স্বপ্নও ছিল। কিন্তু রবি সকালে দেশের ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের ট্রেন্ড সামনে আসতেই আশা- আকাঙ্ক্ষা-স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোট গণনা ও ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে দেশের ৪ রাজ্যের মধ্যে ৩ রাজ্যে জিততে চলেছে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের বিজেপি(BJP)। গোবলয়ে অটুট পদ্মের দাপট। তবে দক্ষিণ ভারতে সাফ হয়ে গেল বিজেপি। এদিনের ট্রেন্ড বলছে ছত্তিশগড় ও রাজস্থান হাতছাড়া হচ্ছে কংগ্রেসের(INC)। দুই রাজ্যই যাচ্ছে বিজেপির পকেটে। আবার মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখছে। খালি তেলেঙ্গানায় প্রথমবারের জন্য ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কংগ্রেস। ২৪’র ভোটের(General Election 2024) আগে এই ৪ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল কংগ্রেস ও বিজেপি দুই দলের কাছেই। আর সেই লড়াইয়েই বিজেপির থেকে অনেকটাই পিছনে পড়ে থেকে লড়াই শেষ করতে চলেছে কংগ্রেস। আর সেই ট্রেন্ড সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়াতে(Social Media) শুরু হয়ে গেল কংগ্রেসেরই নিচুতলার কর্মীদের(Grassroot Level INC Workers) ক্ষোভ উদগীরণের পালা।
রাহুল গান্ধি যখন কংগ্রেসের হাল নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি না হয়েও, তখন থেকেই কংগ্রেসে তিনি নতুন ও তরুণ মুখদের তুলে আনতে চেয়েছিলেন। সেই সূত্রেই গড়ে উঠেছিল ‘রাহুল ব্রিগেড’। কিন্তু বিজেপির কাছে একের পর এক নির্বাচনে কংগ্রেসের হার রাহুলকেও আক্রমণের নিশানায় নিয়ে চলে আসে। ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় রাহুল ব্রিগেড। সেই ব্রিগেডের অনেকেই আজ বিজেপি কিংবা আঞ্চলিক দলগুলিতে চলে গিয়েছেন। হাতেগোনা কয়েকজনই রয়ে গিয়েছেন কংগ্রেসে। কিন্তু দলে তরুণ ও নতুন মুখ তুলে আনা ও তাঁদের কাঁধে তথা হাতে দলের নির্বাচনী দায়দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দাবি এখনও রয়ে গিয়েছে। যদিও সেই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দলে এখনও প্রবীণরাই ছড়ি ঘুরিয়ে চলেছেন। এদিন দলের হার সামনে আসতেই সেই প্রবীণ নেতাদেরই নাম না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ শানানো শুরু করেছেন কংগ্রেসেরই নীচুতলার কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির জয়ের ছবি, ভিডিও, পোস্টের পাশাপাশি ভরে যাচ্ছে কংগ্রেস কর্মীদের ক্ষোভ উদগীরণের নানান কথা।
কী লিখছেন কংগ্রেস কর্মীরা? হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা কংগ্রেস কর্মীদের লেখা ক্ষোভের পোস্টের বাংলা তরজমা করলে তা দাঁড়াবে অনেকটা এইরকম। একজন লিখেছেন, ’৭০, ৮০, ৯০ বছর বয়স পেরোনো নেতারা দলের নিয়ন্ত্রণ করছে এখনও! লজ্জা করে না আপনাদের? ছিঃ! আপনাদের এই বুড়ো মুখ দেখলে ঘৃণা করেন মানুষ। বোঝেন না? এত নির্লজ্জ?’ আবার এখন লিখেছেন, ‘কবর শ্মশানে যাওয়ার যাদের বয়স তাঁরা সাংসদ হয়ে আছে আজীবন। আর আমরা ইয়ং জেনারেশন এদের পিছনে হাততালি, জিন্দাবাদ করছি! থুতু ছেটানো উচিত এই বুড়োলোকগুলোকে।’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘আদের হাতে আর দল তুলে দিয়ে লাভ নেই, গাড়ি করে কবরে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।’ কেউ বা লিখেছেন, ‘বুড্ডা হঠাও কংগ্রেস বাঁচাও।’ কোনও পোস্টে কোনও কংগ্রেস নেতার নাম নিয়ে কোনও আক্রমণ করা হচ্ছে না। তবে সন্দেহ নেই, আক্রমণের লক্ষ্য কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাই।