নিজস্ব প্রতিনিধি: এক বার নয়, বার বার কেঁপে উঠছে পায়ের নীচের মাটি। আর সেটাও হিমালয়ের(The Great Himalaya) পাদদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। কাশ্মীর থেকে অরুণাচল। দিনের পর দিন ভূমিকম্প(Earthquake) হয়ে চলেছে এই হিমালয়ের দক্ষিণ ঢালে। আর তার জেরে ভূ-বিজ্ঞানীদের অনুমান, খুব শীঘ্রই বড়সড় কোনও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে চলেছে দক্ষিণ হিমালয়ের পাদদেশের এলাকা। সেই বিপদ ঘটতে পারে কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, নেপাল, ভূটান, সিকিম, উত্তরবঙ্গ(North Bengal), অসম, মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার কোনও না কোনও অংশে। আর সেই বিপর্যয় ধেয়ে আসবে রিখটার স্কেলে ৮ বা তার আশেপাশের মাপের বড়সড় ভূমিকম্পে যা লক্ষাধিক মানুষের জীবনহানি ঘটাতে পারে।
হিমালয় পৃথিবীর সবথেকে নবীন ভঙ্গিল পর্বত। এখনও তার গঠনকার্য চলছে। প্রতি বছরই সামান্য করে হলেও এভারেস্ট তো বটেই, গোটা হিমালয়ের উচ্চতাও বেড়ে চলেছে। ভূবিজ্ঞানীরা তাই বার বার সতর্ক করছেন, হিমালয়ের ঢালে বা তার পাদদেশের এলাকায় বড় শহর, কংক্রিটের নির্মাণ, জলাধার, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র না গড়তে। নিষেধ করছেন তাঁরা পাহাড় ও বনজঙ্গল কেটে, ফাটিয়ে কোনও নির্মাণকাজ করতে। কিন্তু সেই সব কথায় কার্যত কেউই কর্ণপাত করছেন না। হালের যোশীমঠ শহরের বিপর্যয়ের পরেও কেউ শিক্ষা নেয়নি। ইতিহাস কিন্তু বলছে, হিমালয়ের বুকে বা তার পাদদেশের এলাকায় উপমহাদেশের(Indian Subcontinent) ইতিহাসে সব থেকে বড় ভূমিকম্প হয়ে গিয়েছে। যেমন – ১৯৫০ সালের অসমের ভূমিকম্প, ১৯৭৫ সালের হিমাচল প্রদেশের কিন্নর এলাকার ভূমিকম্প, ২০১৫ সালের নেপালের ভূমিকম্প। এই ৩টি ভূমিকম্পের কম্পন মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ বা তার আশেপাশে রেকর্ড হয়। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষের জীবনহানীর ঘটনা ঘটে।
গত ৩ দশক ধরে ভূ-বিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন বারে বারে হিমালয়ের বুকে বা তার পাদদেশে যে কোনও সময়ে ফের রিখটার স্কেলে ৮ বার তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ভ ভারতের অসম, উত্তরবঙ্গ, সিকিম, নেপাল, উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে তা হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। তাঁদের এটাও দাবি, সেই প্রবল ভূমিকম্প ওই সব এলাকার ভূমানচিত্রকেই যে শুধু বদলে দেবে তাই নয়, অনেক নদীর গতিপথও বদলে দেবে। নেমে আসবে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানীও ঘটাবে সেই ভূমিকম্প। পশ্চিমবঙ্গের বুকে এই বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে উত্তরের পাহাড় ও ডুয়ার্স এলাকায় এবং কলকাতা(Kolkata) ও সুন্দরবন এলাকায়। সেক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি ঘটবে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলার পাশাপাশি কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়।