নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: ‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ, যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ’। যার অর্থ, ঋণ করে হলেও ঘি খাও, যত দিন বাঁচো সুখে বাঁচো। প্রাচীন ভারতের চার্বাক দর্শনের প্রবাদবাক্যটিকে বড্ড আপনার করে নিয়েছে দেশের শাসকরা। ক্ষমতায় টিঁকে থাকতে ‘খয়রাতি’ রাজনীতিতে কে কাকে কতটা টেক্কা দিতে পারেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে জোর টক্কর চলছে। আর সেই টক্করের পাল্লায় ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ক্রমশই ‘ঋণযুক্ত ভারতে’ পরিণত হচ্ছে।
ভারতের নয়া ‘ভাগ্যবিধাতা’ নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময় দেশের ঋণের বোঝা ছিল ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। সাড়ে নয় বছর পরে তা বেড়ে ১৬১.১ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে। মোদির আগে দেশের ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী ৬৭ বছরে ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। পূর্বসূরিদের সবাইকে পিছনে ফেলে মোদি একাই ১০৬ লক্ষ কোটি টাকা দেনা করেছেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পেশ করা এই অর্থবর্ষের বাজেটের নথিতেই দেখা গিয়েছিল, রাজস্ব খাতে ১০০ টাকা খরচ হলে, তার মধ্যে ৪০ টাকা পুরনো ঋণে সুদ মেটাতে যাচ্ছে। কিন্তু তাতে কী? জনতা-জনার্দনের ভোট পেতে দুহাত খুলে ‘খয়রাতি’ রাজনীতি চলছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, ক্লিয়ারিং করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং সেবির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারতের ঋণের বোঝা নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে ইন্ডিয়াবন্ডসডটকম। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের মোট ঋণের বোঝা ২০৫ লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের কাঁধেই চেপে রয়েছে ১৬১.১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ। অথচ গত মার্চে কেন্দ্রের ঋণের বোঝা ছিল ১৫০.৪ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে অতিরিক্ত ১০.৭ লক্ষ কোটি টাকার দেনা চেপেছে।