নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হাতের ট্যাটু, চুরি করা ওয়্যারলেস সেট, সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শেষ অবধি ধরা পড়েন অপরাধীরা। সৌম্যা বিশ্বনাথন হত্যা মামলায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন তদন্তকারীরা অফিসারেরা। এমনকি জিগিশা ঘোষ হত্যা মামলাতেও এই প্রমাণগুলি কাজে লাগিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
রবি কাপুর, অমিত শুক্লা এবং বলজিৎ মালিক যারা ২০০৯ সালে জিগিশা ঘোষকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়, তাঁরা ২০০৮ সালে বিশ্বনাথন হত্যায় জড়িত থাকার বিষয় স্বীকার করেছে। বুধবার দিল্লির সাকেত আদালত রবি কাপুর, অমিত শুক্লা,বলজিৎ মালিক এবং অজয় কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। পঞ্চম অভিযুক্ত অজয় শেঠিকেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১১ ধারায় ও মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্টের (MCOCA) অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর দিল্লি পুলিশ অজয় কুমার এবং অজয় শেঠিকে গ্রেপ্তার করে।
জিগিশা ঘোষকে ১৮ মার্চ, ২০০৯ সালে লুট ও খুন করা হয়।ফরিদাবাদের সুরজ কুন্ড এলাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর দুই-তিন দিন পরে জিগিশার হত্যার মামলাটি সমাধান করা হয়েছিল। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখে একজন অভিযুক্ত জিগিশার ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে শপিং করার সময় তাঁর হাতে ট্যাটু ছিল। অন্য একজন ওয়্যারলেস সেট নিয়েছিল। এরপরেই শীঘ্রই পুলিশ মাসুদপুরে বলজিৎ মালিকের বাসভবনে পৌঁছেছিল। পরে কাপুর ও শুক্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
বলজিৎ মালিকের হাতে তাঁর নামের ট্যাটু ছিল। রবি কাপুরের কাছে একটি ওয়্যারলেস সেট ছিল। যা সে একজন পুলিশ অফিসারের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তাঁরা স্বীকার করে যে, বসন্ত বিহারে তাঁর বাড়ির কাছে থেকে জিগিশাকে অপহরণ করে হত্যা করে। তাঁর থেকে জিনিসপত্র নিয়ে তাঁর দেহ ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে তাঁরা কেনাকাটাও করেছিল।
অভিযুক্ত রবি কাপুর নিজেই স্বীকার করেন তাঁরা নেলসন ম্যান্ডেলা মার্গে অন্য একটি মেয়েকে হত্যা করেছে। সেই জায়গাটি বসন্ত বিহার থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (দক্ষিণ), এইচজিএস ধালিওয়াল অবিলম্বে একটি তদন্তকারী দল গঠন করেন। দুই হত্যা মামলার তদন্তে তৎকালীন এসিপি ভীষম সিংকে নিযুক্ত করেন।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, যে রাতে বিশ্বনাথনকে হত্যা করা হয় তখন রবি কাপুর একটি মারুতি ওয়াগন আর গাড়িতে ছিলেন। শুক্লা ,মালিক ও কুমার ওই গাড়িতেই ছিল। তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিল। একটি গাড়ি তাঁদের গাড়ির পাশ দিয়ে চলে যায়। সেই গাড়িতে সৌম্য বাসন্ত কুঞ্জে অফিস থেকে তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন। একজন মহিলা চালক একা এবং তাদের গাড়ি ওভারটেক করছে দেখে অভিযুক্তেরা তাঁর পিছু ধাওয়া করে। প্রথমে সাংবাদিক বিশ্বনাথনের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হয়। সে গাড়ি না থামালে অভিযুক্ত রবি কাপুর সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথনের গাড়িতে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একটি ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে থেমে যায় বিশ্বনাথনের গাড়ি। অভিযুক্তেরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ২০ মিনিট পর তাঁরা মৃতদেহটি কি অবস্থায় রয়েছে তা দেখতে আসে অভিযুক্তেরা। তবে পুলিশ দেখে আবার পালিয়ে যায়।