নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি : বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’ ব্যর্থ করে তীব্র ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সোমবার বিধানসভায় আস্থা ভোট নেন তিনি। বিরোধীশূন্য বিধানসভায় অনায়াসে আস্থা অর্জন করে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কেজরিওয়াল বলেন, ‘দিল্লিতে মুখ পোড়ার পর এবার অপারেশন ঝাড়খণ্ড হতে চলেছে।’
বিজেপির ‘মুখোশ’ খুলে দিতে একদিনের জন্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকে দিল্লির আপ সরকার। কীভাবে আপ বিধায়কদের কেনার চেষ্টা হয়েছে, তা জনসমক্ষে তুলে ধরতেই এই বিশেষ অধিবেশ্ন বলে জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এদিন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক তোপ দাগেন কেজরিওবাল। একের পর এক অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকার ফেলা থেকে দেশের ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, বিভিন্ন বিষয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করতে দেখা যায় তাঁকে। তাঁর অভিযোগ, “জনকল্যাণে নজর দেওয়ার পরিবর্তে বিজেপির সরকার কোটিপতি বন্ধুদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করেছে।” ঝাড়খণ্ডেও বিরোধী সরকারকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হতে পারে এই অভিযোগ তুলে কেজরিওয়াল বলেন, “কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের পর এ বার ঝাড়খণ্ডেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।” বিরোধী-শাসিত রাজ্যের সরকার ভাঙার পরিকল্পনার সঙ্গে অর্থনীতির অধোগতির যোগসূত্রের দিকে ইঙ্গিত করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রতিবার রাজ্যগুলিতে সরকার ভাঙার পরিকল্পনা করা হয়, আর জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়।” তাঁর সরকারকে ভাঙার জন্যও বিজেপি প্রায় ৮০০ কোটি টাকা নিয়ে নেমেছিল বলে অভিযোগ করেছেন আপ প্রধান। তাঁর অভিযোগ, এক-একজন বিধায়ককে ৪০ কোটি টাকা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কেজরিওয়ালের দাবি, ‘এই আস্থা ভোটের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করলাম আপ বিধায়কদের কেনা যায় না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
কেন তিনি নিজের সরকারের হয়েই আস্থা প্রস্তাব আনলেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, “বিজেপি জিজ্ঞাসা করছে, কেন এটার প্রয়োজন পড়ল? কিন্তু এই আস্থা প্রস্তাব প্রমাণ করল, এই সরকার (দিল্লি সরকার) শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত আছে।” প্রসঙ্গত, তাঁর দলের প্রত্যেক বিধায়কই যে তাঁর সঙ্গে আছেন, তার প্রমাণ দিতেই শুক্রবার দিল্লি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে নিজের সরকারের হয়ে আস্থা প্রস্তাব আনার কথা জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। বিজেপি পাল্টা কটাক্ষ করে জানিয়েছিল, আবগারি-দুর্নীতি থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতেই আপ এই সব নাটক করছে। ৭০ আসনবিশিষ্ট দিল্লি বিধানসভায় আপের ৬২ জন এবং বিজেপির আট জন বিধায়ক রয়েছেন।