নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মোদি সরকার এখনও দেশের নাম বদল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। কিন্তু তাতে কী! রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি রাখতে দেরি না করে পাঠ্যবইয়ে দেশের নাম বদলের সিদ্ধান্ত নিল রাষ্ট্রীয় শিক্ষা অনুসন্ধান এবং প্রশিক্ষণ পরিষদ (এনসিইআরটি)। বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন এনসিইআরটির সদস্য সি আই আইজ্যাক। শুধু যে দেশের নাম বদলাচ্ছে তাই নয়, পাঠ্যবইয়ে অ্যানিসিয়েন্ট হিস্ট্রির নাম বদলে ক্ল্যাসিকাল হিস্ট্রি করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষাবিদরা মনে করছে, বিজেপির হয়ে এনসিইআরটি কর্তারাই আগামী দিনের পড়ুয়াদের মগজধোলাইয়ে নেমে পড়েছেন। শিক্ষায় গৈরিকীকরণ করে হিন্দুত্ববাদের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
মোদি জমানায় গত ৯ বছরে একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছে রাষ্ট্রীয় শিক্ষা অনুসন্ধান এবং প্রশিক্ষণ পরিষদ বা এনসিইআরটি। জীববিদ্যা থেকে রয়ায়ন, ইতিহাস থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান— নানা বিষয়ের পাঠ্যক্রম থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দিয়ে চলেছেন এনসিইআরটির দায়িত্বে থাকা বিজেপিপন্থী তথাকথিত শিক্ষাবিদ ও আধিকারিকরা। আর তাতেই চটেছেন পাঠ্যবই প্রণয়ণের দায়িত্বে থাকা অসংখ্য নামী শিক্ষাবিদ। সম্প্রতি এনসিইআরটি অনুমোদিত বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকের ৩৩ জন লেখক চিঠি পাঠিয়ে ‘পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন কমিটি’ (টিডিসি) থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে বসা জি-২০ সম্মেলনের প্রাক্কালেই দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘ভারত’ করার জিগির উঠেছিল। যদিও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ-ইতিহাসবেত্তাদের তীব্র আপত্তির মুখে দেশের নামবদলের প্রক্রিয়া ‘ঠাণ্ডিঘরে’ পাঠিয়েছে মোদি সরকার। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি রাখতে বিজেপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত সিআই আইজ্যাকের নেতৃত্বে এক কমিটি গঠন করে এনসিইআরটি। ওই কমিটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের বইয়ে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘ভারত’ করার সুপারিশ করে।