নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২০২০, এই সালটি দেশ তথা বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় একবিংশ শতাব্দীর একটি অভিশপ্ত সাল হিসাবে লেখা থাকবে। বিশ্ববাসীর ওপর করোনা মহামারী আছড়ে পড়ার পরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশও কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল লকডাউনের জেরে। একদিকে মহামারীর জেরে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু, অন্যদিকে করোনার হাত থেকে বাঁচতে ঘরবন্দী হয়ে হতাশায় ডুবে যাওয়া এই দুইয়ের মিলিত প্রভাবে দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবন হয়ে উঠেছিল বিষময়। আর মূলত তার জেরেই ২০২০ সালে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা। সমীক্ষা বলছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর কারণ হল প্রেম, বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যা, হতাশা এবং অবশ্যই ২০২০ সালে লকডাউনের জেরে দেশকে যে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল তার পরিণতি। কিন্তু এই তালিকায় উল্লেখজগ্যভাবে নাম নেই বাংলায়। রিপোর্ট বলছে, বাংলায় লকদাউনের জন্য হওয়া আর্থিক অনটনের জেরে কারোর মৃত্যু হয়নি।
এনসিআরবি (NCRB) রিপোর্ট অনুযায়ী, এই রাজ্যে বিবাহকেন্দ্রিক কারণে এই রাজ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন ৩৮৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৬৯ ও মহিলা ২২০ জন। সাংসারিক অশান্তির জন্য যে ২২৩৯ জন আত্মঘাতী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১২৮২ জন পুরুষ ও ৯৫৭ জন মহিলা। আবার অসুস্থতার জন্য ১১০৯ জন আত্মহত্যা করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৭১৩ জন পুরুষ। প্রেমের কারণে গত বছর রাজ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন ৫৭৩ জন। তাঁদের মধ্যে ৩০২ জন পুরুষ ও ২৭১ জন মহিলা। সম্পত্তি নিয়ে গোলমালের জন্য ২২৪ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন মহিলা। অন্যদিকে, ৩৭২৭ জনের আত্মহত্যার ক্ষেত্রে কারণ জানা যায়নি। পেশাগত কারণে রাজ্যে যে আটজন আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই পুরুষ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, একমাত্র বাংলাতেই আর্থিক অনটনের জেরে কোনও আত্মহত্যার কোনও ঘটনা ঘটেনি। অন্যদিকে, বেকারত্বের কারণে হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনাও খুব কম। অন্যদিকে, বাংলা বাদে দেশের অন্যান্য রাজ্যে কিন্তু এই অসভাবাবিক মৃত্যু কিংবা আত্মহত্যার হার অনেক বেশী। সুতরাং বলা যেতেই পারে লকডাউন পরিস্থিতিতে যখন সমগ্র দেশের মানুষের টালমাটাল অবস্থা তখন কিছুটা হলেও স্বস্তির দিন কাটিয়েছে বাংলার মানুষ।