নিজস্ব প্রতিনিধি: দিন দুই আগেই সামনে এসেছে দেশের ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস(INC) জয়ের মুখ দেখলেও গো-বলয়ের ৩ রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে বিজেপির(BJP) কাছে হেরেছে রাহুল গান্ধির(Rahul Gandhi) দল। এই ৩ রাজ্যেই কংগ্রেসের পাশাপাশি লড়াই করেছিল দুই বাম দল সিপিআই(এম)(CPIM) ও সিপিআই(CPI)। দেখা যাচ্ছে ৩টি রাজ্যেই এই দুই বামদল নোটায় পড়া ভোটের থেকেও কম ভোট পেয়েছে। একই সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় ভোট কেটে কংগ্রেসের যাত্রাভঙ্গ করেছে। এবার সেই দুই বাম দলই অবতীর্ণ হল রাহুল গান্ধির বিরোধিতায়। আর সেটাও বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে। দুই বাম দলের দাবি, ২৪’র নির্বাচনে(General Election 2024) রাহুল গান্ধি যেন কেরলের ওয়েনাদ থেকে আর যেন না লড়াই করেন। তিনি যেন কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা বা উত্তর ভারতের কোনও রাজ্য থেকে প্রার্থী হন।
ভারতের এখন একমাত্র রাজ্য কেরলেই বামেদের সরকার টিকে রয়েছে। সে রাজ্যে ৫-১০ বছর অন্তর অন্তর সরকার বদলে যায়। কখনও বামেরা সরকার চালায় তো কখনও কংগ্রেস। এখন দেখা যাচ্ছে কেরলের বাম সরকারের আমলেই সেখানে হু হু করে বেড়ে চলেছে বিজেপি ও RSS’র প্রভাব। একই সঙ্গে বাড়ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিরও প্রভাব। বাম সরকার ও বামদলগুলি কার্যত এই গেরুয়া প্রভাব ও দাপট ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কংগ্রেসকে সেখানে লড়াই করতে হচ্ছে বাম ও বিজেপি দুইয়ের বিরুদ্ধেই। সেই লড়াইয়ে বিজেপিকে হারাতে বামেরা কিন্তু বিন্দুমাত্র সহায়তা করছে না কংগ্রেসকে। সেই কেরলের মাটিতে দাঁড়িয়েই ২০১৯ সালে ওয়েনাদ থেকে জয়ী হন রাহুল গান্ধি। এখন বাম নেতারা চাইছেন রাহুল কেরলের মাটি ছেড়ে দিক, যাতে কিনা বিজেপির সুবিধা হয়ে যায়। এই নিয়ে কী বলছেন বাম নেতারা?
সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার দাবি, রাহুলের উচিত হবে উত্তর ভারতের কোনও আসন থেকে লড়াই করা যেখানে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি। সিপিআই(এম)’র কেরল ইউনিটের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন আবার জানিয়েছেন, রাহুল বিজেপি বিরুদ্ধে লড়াই করুক, কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে নয়। আবার কেরলেরই রাজস্বমন্ত্রী তথা সিপিআই বিধায়ক কে রাজন জানিয়েছেন, যদি একান্তই রাহুলের দক্ষিণ ভারত থেকেই লড়াই করার ইচ্ছে হয় তাহলে তিনি কর্ণাটক থেকে লড়াই করুন।
মজা হচ্ছে, যে দুই বাম দল গো-বলয়ের ৩ রাজ্যে নোটার চেয়েও কম ভোট পেয়েছে তাঁরা পরামর্শ দিচ্ছে যাতে রাহুল কেরল থেকে না লড়াই করেন। কেনন রাহুল জিতলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেরলের মাটিতে বামেদের ভরাডুবির আশঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে। অতএব রাহুল তাড়াও, বিজেপি বাঁচাও। এই ফর্মুলাই এখন বেছে নিয়েছে দুই বাম দল। এরাই আবার বিজেপি বিরোধী মহাজোট INDIA’এ শরিকদল। এরাই থেকে থেকে বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) বিজেপির মিত্র বলে নিশানা বানায়। আসল মিত্র কে সেটা অবশ্য জনগণ বিলক্ষণ দেখতে পাচ্ছে।