নিজস্ব প্রতিনিধি: কেশপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর: ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর এলাকায় ভোট প্রচারে দীপক অধিকারী সঙ্গে বন্ধু কাঞ্চন মল্লিক। মঙ্গলবার বিকেলে তেঘরী অঞ্চলের মোহনপুর, আমলাবনী, আনন্দপুর হয়ে কেশপুরে গিয়ে প্রচার শেষ হয়। প্রচার শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বললেন প্রথমবার কেশপুরে কাঞ্চন দা আমার সঙ্গে আসলো, আস্তে আস্তে কাঞ্চন দাও বলছিলো কেশপুরে রাস্তাঘাট কত উন্নত হয়ে গেছে। হিরনের অভিযোগের ভিত্তিতে দেব বলেন, এটা বিধানসভা নির্বাচন নয়! প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোট! উনি কেন্দ্রের এমন দশটা বা পাঁচটা প্রকল্পের নাম বলুন যেটায় কেশপরের মানুষ সুবিধা পেয়েছে।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন ঘাটালের আসল কাজ ঘাটাল মাস্টারপ্যান রূপায়ণের রূপরেখা তৈরি হয়ে গেছে। এখানে “কন বানেগা মুখ্যমন্ত্রী নয়, কন বানেগা প্রধানমন্ত্রী” র ভোট হচ্ছে। তবে আগামী লোকসভার থেকে কেশপুরে ভোট মার্জিন বাড়বে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করতে তিনি বলেন, মার্জিন এর নেশা আমার নেই। একটা ভোটে জিতলেও সেটা জয় আমি মনে করি। কেশপুরে এত মানুষের ভালোবাসা আমার সঙ্গে রয়েছে এটাই আমার কাছে অনেক। দেবকে হিরনের ব্যক্তিগত আক্রমণের উত্তরে দেব বলেন যদি এক বছর আগের থেকে ভোট ঘোষণা হতো, তাহলে হিরন বলতো দেবের জন্যই মনে হয় ভারত ওয়ার্ল্ড কাপ হেরে গেছে। তবে কাঞ্চন মল্লিক কে প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন কেশপুরে মানুষের যে ভালবাসা পেয়েছি, তাতে আমি আপ্লুত। এত মানুষের ভালোবাসা দেবের সঙ্গে আছে তাতে দেব অনেক বেশি ভোটে জিতুক এটাই আমি চাইবো।’
কিচ্ছুদিন আগে শ্রীরামপুরে ভোট প্রচার করতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন কাঞ্চন মল্লিককে। সেদিন হুডখোলা গাড়িতে আরও কয়েকজনের পাশাপাশি কল্যাণের সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে। কিন্তু প্রচার শুরুর আগেই কাটে তাল। কাঞ্চন মল্লিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলেন খোদ শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ। কারণ হিসেবে জানান, কাঞ্চনকে দেখলেই গ্রামের মহিলারা ‘ভীষণ রিয়্যাক্ট’ করছেন। তাই তিনি কাঞ্চনকে তাঁর সঙ্গে গ্রামে প্রচারে নিয়ে যেতে পারবেন না, অগত্যা মনমরা হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন কাঞ্চন মল্লিক, তবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি। কল্যাণ শ্রীরামপুরে দীর্ঘদিনের সাংসদ, তাই নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে দিনভর প্রচার চালাচ্ছেন। তাই কল্যাণ চাননি তাঁর প্রচার গাড়িতে থাকুক কাঞ্চন। এরপরই উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণের প্রচার গাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। দলীয় সূত্রের খবর, কাঞ্চন গাড়ি থেকে নেমে একটুকুও দাঁড়াননি সেখানে, কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে, কল্যাণ বলছেন, উনি মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন কি হননি, তিনি জানেন না। এর আগেও কাঞ্চনকে নিয়ে তিনি প্রচার করেছেন। আর এখন যখন তিনি তাঁর সঙ্গে প্রচারে বেরোচ্ছেন তখন গ্রামের মহিলারা ভীষণ রিয়্যাক্ট করছেন।
তাই আগেই কল্যাণ জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে গ্রামে না আসতে। আর কাঞ্চন তো তাঁর সঙ্গে না থেকেও প্রচার করতে পারেন নিজের মতো। আসলে কাঞ্চন টলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। কিন্তু বর্তমানে ব্যক্তিগত কারণে শিরোনামে আছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর খুব সম্প্রতি আবারও বিয়ে করেছেন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন, অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে। এই নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। কাঞ্চনকে নিয়ে কটাক্ষের ঝড়ও চলেছে অনেক। প্রাক্তন দুই স্ত্রীকে ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু একজনের উপর বেশিদিন মন থাকে না তাঁর। দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কির সঙ্গেও কম ঝামেলা হয়নি। তা নিয়েই কল্যানের এলাকার মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বলে দাবি বিদায়ী সংসদের। যদিও কল্যাণ স্পষ্ট করেননি, গ্রামের মহিলারা ঠিক কোন কারণে কাঞ্চনকে নিয়ে আপত্তি করছেন? আবার অনেকে ধারণা, কাঞ্চনের জনপ্রিয়তা বেশি তাই তিনি থাকলে কল্যাণকে কেউ পাত্তাই দেবে না, তাই হয়তো তিনি এদিন প্রচারে কাঞ্চনকে রাখতে চাননি। তাই এদিন কাঞ্চনকে সঙ্গে নিয়ে দেব প্রচার সারলেন।