নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১৬২ হেক্টর বিস্তৃত গ্রাম। অথচ বসবাস করে শুধুমাত্র একটি পরিবার। আসামের নলবাড়ি জেলা থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরে ঘোগড়াপাড়া সার্কেলের এই গ্রামের এমনই করুণ অবস্থা। গ্রামের একমাত্র বাসিন্দা ৫ সদস্যের এক পরিবার। বাকি অংশ জনশূন্য। কেন এই গ্রাম জনশূন্য নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এই গ্রামে মাত্র ১৬ জন মানুষ থাকত। বর্তমানে তা তলানিতে ঠেকেছে। যদিও বা একটি পরিবার রয়েছে তাঁরাও বেহাল দশায় পরে রয়েছে। গ্রামের একমাত্র বাসিন্দা বিমল ডেকা, তার স্ত্রী অনিমা এবং তাদের তিন সন্তান নরেন, দিপালী এবং সেউতি।
বহু বছর আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাস্তার উদ্বোধন করেছিলেন। এখন সেই পথের অবস্থাও জরাজীর্ণ। ফলে যানবাহন চলাচলযোগ্য সড়কে পৌঁছানোর জন্য জলকাদার মধ্যে দিয়ে ২ কিমি হেঁটে যেতে হয়। বর্ষাকালে নৌকার মাধ্যমে যাতায়াত করতে হয়। কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও পরিবারটির তিন সন্তানই উচ্চশিক্ষা থেকে বিরত থাকেনি। দিপালী ও নরেন স্নাতক, সেউতি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছেন। এমনকি গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় শিশুরা কেরোসিনের বাতির আলোয় লেখাপড়া করে।
কয়েক দশক আগে পর্যন্ত এতটা করুণ ছিল না বলে দাবি আশেপাশের এলাকার লোকজনের। পরিবারটির সদস্যা অনিমা জানিয়েছেন, কৃষি এবং পশুপালন তাদের মূল ভিত্তি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই এই অবস্থা। তাই গ্রামবাসীরা গ্রাম পরিত্যাগ করেছে। জেলা পরিষদ, গাঁও পঞ্চায়েত বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসের মতো স্থানীয় সংস্থাগুলি এখানে কোনও কাজ করতে আগ্রহী নয় বলে তিনি দাবি করেন।
সরকার রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থা করলে, মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করলে, কৃষিকাজের পরিবেশ ফিরে এলে মানুষ আবার গ্রামে ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন এক এনজিও-এর কর্মকর্তা।